স্কয়ার ড্রাইভ
পাকিস্তানকে অগোছালো মনে হচ্ছে
হারলেই পাকিস্তান দলকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পাতানো ম্যাচ খেলে হেরেছে- এমন সন্দেহ করে অনেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেও তাদের ঘিরে এমন গুঞ্জন ছিল। আমার অবশ্য ম্যাচটা দেখে তেমন কিছু মনে হয়নি। আসলে তারা একদমই ভালো খেলতে পারেনি। পাকিস্তান দলকে খুব অগোছালো মনে হয়েছে।
তাদের খেলা দেখে মনে হচ্ছে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই মাঠে নেমেছে। এই ম্যাচে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের মধ্যে ভালো করার তাগিদ দেখতে পাইনি। যেন খেলা দ্রুত শেষ করতে পারলেই বাঁচে!
অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের কাছে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। শনিবার তারা দারুণ ব্যাটিং করেছে। প্রত্যেক ব্যাটসম্যান নিজের দায়িত্ব পালন করে ভালো খেলেছে। আন্দ্রে রাসেলের ১৩ বলে অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংসটি অসাধারণ। পাশাপাশি স্যামুয়েলস-ব্রাভো-রামদিন ভালো ব্যাট করায় প্রতিপক্ষের সামনে একটা বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
পাকিস্তানের বোলাররা লাইন-লেংথ ঠিক রেখে বল করতে পারেনি বলেই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা সেই সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে। এত দুর্বল বোলিং আক্রমণ নিয়ে বিশ্বকাপে বেশি দূর এগোনো সম্ভব নয়।
সে তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিংয়ে অনেক পরিকল্পনার ছাপ ছিল। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা বুঝে নিয়ে ঠিক জায়গায় বল ফেলে উইকেট তুলে নিয়েছে তারা। টেলর অসাধারণ বল করেছে। অন্যরাও ভালো বল করায় পাকিস্তানকে ১৬০ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে ক্যারিবীয়রা।
মাত্র এক রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর যেকোনো দলের জন্যই ঘুরে দাঁড়ানো খুব কঠিন। পাকিস্তানের পক্ষেও তা সম্ভব হয়নি। শোয়েব মাকসুদ ও উমর আকমলের ফিফটি দুটো হারের ব্যবধান কমালেও বিশ্বকাপে নিজেদের সবচেয়ে বড় হারের লজ্জা এড়াতে পারেনি তারা।
ক্রাইস্টচার্চের উইকেট কিছুটা বাউন্সি। প্রথম ১০ ওভারে পেসাররা বাড়তি সুবিধা পায় সেখানে। এখন ওয়ানডেতে প্রতি ইনিংস দুটো বলে খেলা হয় বলে ব্যাটসম্যানদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা দৃঢ়তার সঙ্গে এই সমস্যা মোকাবিলা করতে পেরেছে। কিন্তু পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা তা পারেনি।
একটা বিষয় পরিষ্কার, নিউজিল্যান্ডের উইকেট নিয়ে অন্য দলগুলোকেও আলাদা করে ভাবতে হবে। নইলে সমস্যায় পড়তে হবে তাদেরও।
এই ম্যাচে পাকিস্তান যেমন খেলেছে, তার থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে তাদের পক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা কঠিন হয়ে পড়বে। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে যাওয়ার পর শনিবারের বিশাল হার মিসবাহর দলের ওপর চাপ অনেক বাড়িয়ে দিল।
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু : জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচও তিনি।