আগামীতে ১০ দলের বিশ্বকাপ?
এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কা কোনোমতে হার এড়িয়েছে নবাগত আফগানিস্তানের বিপক্ষে। জয় না পেলেও স্কটল্যান্ড-আরব আমিরাতের দারুণ লড়াই বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। কিন্তু ২০১৯ সালে পরের বিশ্বকাপে না-ও দেখা যেতে পারে আইসিসির এই সহযোগী সদস্যদের। এবারের মতো ১৪টি নয়, চার বছর পর ১০টি দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চাচ্ছে আইসিসি।
ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ অস্বস্তিতে পড়তে পারে। ১০ দলের বিশ্বকাপ হলে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের সেরা আট দল সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। বাকি দুটো দল বেছে নেওয়া হবে বাছাইপর্ব থেকে। বর্তমানে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের একাদশ আসরেও একটা ‘গ্রহণযোগ্য’ ফরম্যাট খুঁজে পায়নি আইসিসি। তবে ১৯৭৫ সালে শুরু হওয়ার পর বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বেড়েছে। বিস্ময়করভাবে কমেও এসেছে! ৮, ৯, ১২ থেকে এখন ১৪ দলের আসরে পরিণত হয়েছে ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল ১৬টি দল। পরের বিশ্বকাপেই তা কমে দাঁড়ায় ১৪টিতে। এবার দলের সংখ্যায় পরিবর্তন আসেনি।
তবে আইসিসি সংখ্যাটা কমিয়ে দিতে চাইছে। কারণটাও স্পষ্ট—বিশ্বকাপকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা। আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন বলেছেন, ‘আমাদের এমন একটা ব্যাপার নিশ্চিত করতে হবে যেন শীর্ষ পর্যায়ের দলগুলোর মধ্যে আরো জমজমাট লড়াই হয়। আমরা যদি ১০ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন করি, তাহলে ১০টি দলেরই যেন শিরোপা জয়ের সামর্থ্য থাকে।’
আইসিসির কর্তাব্যক্তিদের মতে, ১৯৯২ বিশ্বকাপ ছিল ওয়ানডের সেরা টুর্নামেন্টটির আদর্শ ‘মডেল’। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের যৌথ আযোজনের প্রথম বিশ্বকাপে লিগ ভিত্তিতে ৯টি দল একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছিল। এরপর সেরা চার দল খেলেছিল সেমিফাইনালে।
এই ফরম্যাটের প্রশংসা করে রিচার্ডসন বলেছেন, ‘সেটা ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়, উত্তেজনায় ভরা বিশ্বকাপ। কোন্ চারটা দল শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে উঠবে তা কিছুতেই অনুমান করা যাচ্ছিল না। আশা করি ১০ দলের বিশ্বকাপও জমজমাট হবে।’
তবে আইসিসির এই ভাবনা মেনে নিতে পারছেন না শচীন টেন্ডুলকার। ১০ দলের বিশ্বকাপের বিরুদ্ধে ভারতের ব্যাটিং-কিংবদন্তির যুক্তি, ‘ক্রিকেটকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাইলে বেশি দলের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে হবে। তার মানে এই নয় যে আমরা ক্রিকেটের মানের সঙ্গে কোনো রকম আপস করব। কিন্তু টেস্ট দলের বাইরের দলগুলোর খেলার মান কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়েও আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। আমার মনে হয় নিচের সারির দলগুলোর মান তখনই বাড়বে যখন তারা সেরা দলগুলোর বিপক্ষে বেশি-বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।’