ক্যানবেরায় ‘গেইল-ঝড়’
সময়টা ভালো যাচ্ছিল না ক্রিস গেইলের। মঙ্গলবারের আগে সর্বশেষ ১৮টি ওয়ানডেতে মাত্র ২৬৩ রান এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্রমণাত্মক ওপেনারের ব্যাট থেকে। বিশ্বকাপেও প্রথম দুই ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেননি। আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়া প্রথম ম্যাচে ধীরগতির ৩৬ রানের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ৪ রান। কিন্তু ‘ঘুমন্ত দৈত্য’ যে অচিরে জেগে উঠবে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সে কথা বলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। আর গেইল ‘ঘুম’ ভেঙে জেগে উঠলে কী অবস্থা হয়, সেটা শুধু জিম্বাবুয়ে নয়, আরেকবার টের পেল ক্রিকেট-বিশ্বও। ক্যানবেরার মানুকা ওভালে গেইলের ব্যাটের ঝড়ে রেকর্ড বইয়ের বেশ কয়েকটি পাতা এলোমেলো হয়ে গেছে!
১৪৭ বলে ২১৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে ডাবল সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েছেন গেইল। এক ম্যাচে বীরেন্দর শেবাগ ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের ১৬টি ছক্কা মারার রেকর্ড স্পর্শ করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মারলন স্যামুয়েলসকে নিয়ে ওয়ানডেতে ৩৭২ রানের রেকর্ড জুটি গড়ার কৃতিত্বও গেইলের। পাশাপাশি ব্রায়ান লারার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি স্পর্শ করেছেন নয় হাজার রানের মাইলফলক।
বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস এতদিন ছিল গ্যারি কারস্টেনের দখলে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৮৮ রান করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ওপেনার। ক্যানবেরায় সেই রেকর্ড ভেঙে বিশ্বকাপে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির আনন্দে মেতে উঠেছেন গেইল।
বিশ্বকাপে প্রথম হলেও ওয়ানডেতে এটা পঞ্চম দ্বিশতক। এর আগে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ২০০ রান করার কীর্তি ছিল শুধু ভারতীয়দের। এর মধ্যে রোহিত শর্মা দুবার ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। শচীন টেন্ডুলকার ও শেবাগ একবার করে। তবে একদিক দিয়ে ভারতের তিন ব্যাটিং তারকাকে পেছনে ফেলে দিয়েছেন গেইল। মাত্র ১৩৮ বলে ২০০-তে পৌঁছে ওয়ানডেতে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ১৪০ বলে আগের রেকর্ড ছিল বীরেন্দর শেবাগের।
মঙ্গলবার ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই ডোয়াইন স্মিথকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭২ রানের জুটি গড়েন গেইল ও স্যামুয়েলস। ওয়ানডেতে এটাই এখন সবচেয়ে বড় জুটি। আগের রেকর্ডটা ছিল শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়ের। ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩১ রানের জুটি গড়েছিলেন ভারতের দুই তারকা ব্যাটসম্যান। সেই রেকর্ডও হয়েছিল দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে।