বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিং-প্রদর্শনী
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলকে এতটা বাজে ফিল্ডিং করতে দেখা যায়নি। ক্যাচ-স্টাম্পিং ‘মিসের প্রদর্শনী’র জন্য টেস্ট-ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্মভূমি মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডকে যেন বেছে নিলেন এনামুল-মুমিনুল-মুশফিকরা!
বাংলাদেশের জঘন্য ফিল্ডিংয়ের ফায়দা তুলে দলকে বিশাল সংগ্রহ এনে দিতে ভুল হয়নি শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের। তিলকারত্নে দিলশান ও কুমার সাঙ্গাকারার শতকে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ৩৩২ রানের ‘পাহাড়’ গড়েছে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নরা।
এমসিজি নামে পরিচিত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এটাই বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। আর সেই ম্যাচের প্রথম ওভারেই কিনা ক্যাচ ‘ড্রপ’! অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার করা দিনের চতুর্থ বল থিরিমান্নের ব্যাটে লেগে চলে যায় প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো এনামুল হকের কাছে। অতি সহজ ক্যাচটা দু-তিনবার লোফালুফি করে মাটিতে ফেলে দেন এনামুল। তখনো শ্রীলঙ্কার রানের চাকা ঘুরতে শুরু করেনি।
নবম ওভারে আবার হতাশ হন মাশরাফি। বাংলাদেশের সেরা পেসারের বল থিরিমান্নের ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম ও এনামুলের মাঝখান দিয়ে। দুজনেই ক্যাচটি ধরার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি। ২২তম ওভারে থিরিমান্নেকে দ্বিতীয় ‘জীবন’ দিয়েছেন মুশফিক। সাব্বির রহমানের বলে সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হেলায় হারিয়েছেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক। সে সময় থিরিমান্নের রান ছিল ৪৪।
৩৩তম ওভারে ফিরতি ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন তরুণ পেসার তাসকিন আহমেদ। ৪০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা সাঙ্গাকারা তখন ছিলেন ২৩ রানে। ৪১তম ওভারে সাঙ্গাকারার ক্যাচ ফেলে দেন ভালো ফিল্ডার হিসেবে পরিচিত মুমিনুল। রুবেলের বলে পয়েন্টে দাঁড়িয়ে অতি সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি তিনি। তখন সাঙ্গাকারা ছিলেন ৬০ রানে। সেই হতাশা থেকেই কি না, ওভার থ্রো করে মুমিনুল দিয়ে দেন তিন রান! পরের ওভারে নষ্ট হয় রানআউটের সুবর্ণ সুযোগ।
সাঙ্গাকারা-দিলশানের ভুল বোঝাবুঝি কাজে লাগিয়ে অনেকটা সময় নিয়ে দেখেশুনে থ্রো করেছিলেন এনামুল। কিন্তু স্টাম্পে বল লাগাতে পারেননি। উইকেটরক্ষক মুশফিকও এগিয়ে আসেননি স্টাম্পের দিকে। ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ঘটনাটার বর্ণনা দিয়েছে এভাবে, ‘দিলশান উইকেটের মাঝখানে চলে গেছেন। কিন্তু মুশফিকুর স্টাম্পের দিকে এক পা-ও এগিয়ে আসেননি। এটা খুব বাজে কিপিং। ফিল্ডারের সরাসরি থ্রোও স্টাম্পে আঘাত হানতে পারেনি।’ তখন দিলশানের রান ১০৬।
শূন্য ও ৪৪ রানে বেঁচে যাওয়া থিরিমান্নে শেষ পর্যন্ত ফিরেছেন ৫২ রান করে। তবে ২৩ ও ৬০ রানে ‘জীবন’ ফিরে পাওয়া সাঙ্গাকারাকে ফেরাতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৭৬ বলে ১০৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। আর নিশ্চিত রান আউট থেকে বেঁচে যাওয়া দিলশান ১৪৬ বলে ক্যারিয়ারসেরা ১৬১ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ থেকে ফিরেছেন।