সাঙ্গাকারা-থিরিমান্নের শতকে বিধ্বস্ত ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ৩১০ রানের লক্ষ্যকে পাত্তাই দিলেন না শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। দুই বাঁ-হাতি লাহিরু থিরিমান্নে ও কুমার সাঙ্গাকারার দারুণ শতক সহজ জয় এনে দিয়েছে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের। ১৬ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পথেও অনেকখানি এগিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কানরা।
‘এ’ গ্রুপে চার ম্যাচের চারটিতেই জিতে ৮ পয়েন্ট পাওয়া নিউজিল্যান্ডের শেষ আট প্রায় নিশ্চিত। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে শ্রীলঙ্কা। তিনটি করে ম্যাচ খেলা অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট করে। তবে শ্রেয়তর নেট রান রেট বাংলাদেশকে রেখেছে তৃতীয় স্থানে। চার ম্যাচে মাত্র একটি জয় পাওয়া ইংল্যান্ড দুই পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে।
ওয়ানডেতে চতুর্থ ও বিশ্বকাপে প্রথম শতকের দেখা পাওয়া থিরিমান্নে ভাগ্যবান, আবারও শুরুতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেছেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এনামুল হকের ‘কৃপায়’ প্রথম ওভারেই ‘জীবন’ পেয়েছিলেন। রোববার ওয়েলিংটনের ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে পেলেন চতুর্থ ওভারে, উইকেটরক্ষক জস বাটলার ও স্লিপ ফিল্ডার জো রুটের ‘সৌজন্যে’।
মাত্র তিন রানে ‘জীবন’ পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল হয়নি থিরিমান্নের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিফটির পর আউট হয়ে গেলেও ইংল্যান্ডকে কোনো ছাড় দেননি। থিলিমান্নের আর তিলকারত্নে দিলশানের ১০০ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই শ্রীলঙ্কার সহজ জয়ের ভিত নির্মিত।
১৯তম ওভারের শেষ বলে ৪৪ রান করা দিলশানকে অধিনায়ক ওয়েন মরগানের ক্যাচ বানিয়ে জুটিটা ভেঙে দেন মইন আলী। ম্যাচে সেটাই ইংল্যান্ডের শেষ সুখস্মৃতি। এরপর থিরিমান্নে-সাঙ্গাকারার ২১২ রানের অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে একেবারে পিষ্ট হয়ে গেছে তারা।
শচীন টেন্ডুলকারের পর ওয়ানডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাঙ্গাকারা ছিলেন যথারীতি আক্রমণাত্মক। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করা শ্রীলঙ্কার উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের ৮৬ বলে অপরাজিত ১১৭ রানের ইনিংসটা গড়ে উঠেছে ১১টি চার ও দুটি ছক্কায়। ওয়ানডেতে ‘সাঙ্গা’র এটা ২৩তম ও বিশ্বকাপে তৃতীয় সেঞ্চুরি।
থিরিমান্নে অতটা আক্রমণাত্মক হতে পারেননি। তাঁর ১৪৩ বলে অপরাজিত ১৩৯ রানের ইনিংসে ছিল ১৩টি চার ও দুটি ছক্কা।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ৩০৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ইংল্যান্ড। দলকে ৩০০ রানের ওপরে নিয়ে যেতে প্রধান অবদান চতুর্থ সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া জো রুটের। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ১০৮ বলে ১২১ রানের দারুণ ইনিংসটা সাজানো ছিল ১৪টি চার ও দুটি ছক্কায়। রুটের সঙ্গে ইয়ান বেল (৪৯) ও বাটলারের (অপরাজিত ৩৯) দৃঢ়তা লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিল দলকে।
কিন্তু ইংল্যান্ডের বোলাররা যে লড়াই করতেই পারলেন না!
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩০৯/৬ (মইন ১৫, বেল ৪৯, ব্যালান্স ৬, রুট ১২১, মরগান ২৭, টেলর ২৫, বাটলার ৩৯*, ওকস ৯*; দিলশান ১/৩৫, হেরাথ ১/৩৫, ম্যাথিউস ১/৪৩, পেরেরা ১/৫৫, মালিঙ্গা ১/৬৩, লাকমল ১/৭১)
শ্রীলঙ্কা : ৪৭.২ ওভারে ৩১২/১ (থিরিমান্নে ১৩৯*, দিলশান ৪৪, সাঙ্গাকারা ১১৭*; মইন ১/৫০)
ফল : শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : কুমার সাঙ্গাকারা।