বাংলাদেশের প্রেরণা সেই ‘ঐতিহাসিক’ জয়
স্কটল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এক মধুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৯৯ সালে স্কটিশদের হারিয়েই বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর অপরাজিত ৬৮ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস এবং তারপর বোলারদের নৈপুণ্যে বিশ্বকাপের মঞ্চে লাল-সবুজের প্রথম বিজয়-নিশান উড়েছিল। বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের ছোট্ট শহর নেলসনে সেই স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার আগে ১৬ বছর আগের সুখস্মৃতি মাশরাফি-সাকিব-মুশফিকদের অনুপ্রাণিত করবেই।
শুরুতে বিপদে পড়ে গেলেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সেই প্রেরণা নেওয়ার জন্যও এডিনবরার সেই ম্যাচটির দিকে ফিরে তাকাতে পারে মাশরাফির দল। ১৯৯৯ সালের ২৪ মে টস হেরে কনকনে ঠাণ্ডায় বিরূপ কন্ডিশনে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২৬ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। তবে নান্নু, নাইমুর রহমান দুর্জয় (৩৬) ও এনামুল হক মনির (১৯) ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বাংলাদেশ পেয়ে যায় নয় উইকেটে ১৮৫ রানের লড়াই করার মতো সংগ্রহ। এরপর হাসিবুল হোসেন, মঞ্জুরুল ইসলাম ও খালেদ মাহমুদের দারুণ বোলিং এনে দেয় ২২ রানের ‘ঐতিহাসিক’ জয়।
বাংলাদেশের ক্রিকেট এরপর অনেক পথ পেরিয়েছে, পেয়েছে টেস্ট মর্যাদা। ২০০৭ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বেও খেলেছে। এবার কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্নের পথে প্রথম বাধা স্কটল্যান্ড। স্কটিশদের তাই হারাতেই হবে মাশরাফির দলকে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের আগে আলোচনায় শেন জার্গেনসেন। বছর খানেক আগেও বাংলাদেশের কোচের দায়িত্বে থাকা জার্গেনসেনকে শুধু এই ম্যাচের জন্যই পরামর্শক হিসেবে নিয়ে এসেছে স্কটল্যান্ড।
সাকিব আল হাসান অবশ্য এ নিয়ে চিন্তিত নন। আধুনিক ক্রিকেটে কোনো দলেরই শক্তি-দুর্বলতার কথা চাপা থাকে না জানিয়ে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়কের অভিমত, ‘এখনকার দিনে বিশ্বক্রিকেটের সবাই সবার সম্পর্কে জানে। প্রায় সব ম্যাচই টেলিভিশনে দেখানো হয় বলে প্রত্যেক দলই অন্য দলগুলোকে নিয়ে বিশ্লেষণ করার সুযোগ যায়। পরিকল্পনাই যদি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতো, তাহলে মানুষ শুধু পরিকল্পনাই করত, মাঠে নেমে আর খেলত না। মাঠে নেমে ভালো খেলাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মাশরাফি বিন মুর্তজা। স্কটিশদের মুখোমুখি হওয়ার আগের দিন সেই প্রতিজ্ঞাই ধ্বনিত হলো বাংলাদেশ অধিনায়কের কণ্ঠে, ‘আমাদের সামনে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার ভালো সুযোগ। দলের সবাই সেদিকে তাকিয়ে আছে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো খেলে জিততে পারলে অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হতে পারব আমরা।’
অন্যদিকে বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের আনন্দে মেতে ওঠার স্বপ্ন দেখছে স্কটল্যান্ড। স্কটিশ অধিনায়ক প্রেস্টন মমসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে হারানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। প্রথম তিন ম্যাচে আমরা ভালোই খেলেছি। কিন্তু তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।’