আয়ারল্যান্ডের রোমাঞ্চকর জয়
দুটি চমৎকার সেঞ্চুরি, দুই দলের ৬৫৭ রান - দারুণ এক ম্যাচের সাক্ষী হয়ে রইল হোবার্টের বেলেরিভ ওভাল। শনিবার বিশ্বকাপে ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে নাটকীয়ভাবে জিম্বাবুয়েকে পাঁচ রানে হারাল আয়ারল্যান্ড।
এই জয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আশাও বেঁচে থাকল আইরিশদের। চার ম্যাচে তৃতীয় জয়ে তাদের সংগ্রহ ছয় পয়েন্ট। পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্টও ছয়, তবে দুই দলই একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে আয়ারল্যান্ডের চেয়ে। পাঁচ ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে পঞ্চম স্থানে। টানা চার জয়ের সুবাদে ‘বি’ গ্রুপ থেকে সবার আগে শেষ আট নিশ্চিত করেছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
৩৩২ রানের কঠিন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৭৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। তবে পঞ্চম উইকেটে টেলর ও শন উইলিয়ামসের ১২৫ বলে ১৪৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় আফ্রিকার দেশটি। ওয়ানডেতে সপ্তম শতকের দেখা পাওয়া টেলর ছিলেন আক্রমণাত্মক। তাঁর ৯১ বলে খেলা ১২১ রানের দারুণ ইনিংসটা সাজানো ১১টি চার ও চারটি ছক্কায়।
৩৮তম ওভারে টেলরের বিদায়ের সময় স্কোর ছিল ২২৩/৫। জয় তখনো ১০৯ রান দূরে। তবে উইলিয়ামসের দারুণ ব্যাটিং জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল জিম্বাবুয়েকে। এই বাঁহাতিও এগিয়ে যাচ্ছিলেন জীবনের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ‘ম্যাজিক ফিগার’ থেকে মাত্র চার রান দূরে থাকতে ফিরতে হয়েছে উইলিয়ামসকে। কেভিন ও’ব্রায়েনকে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেট বাউন্ডারিতে জন মুনির দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন তিনি। উইলিয়ামসের ৮৩ বলে ৯৬ রানের আক্ষেপভরা ইনিংসে সাতটি চার ও দুটি ছক্কা।
উইলিয়ামসের বিদায়ের সময় তিন উইকেট হাতে নিয়ে ১৯ বলে ৩২ রান প্রয়োজন ছিল আয়ারল্যান্ডের। কেভিনের করা ৪৯তম ওভারে তাওয়ান্দা মুপারিওয়ার দুটি চার ও একটি ছক্কা ১৯ রান এনে দেয় জিম্বাবুয়েকে। তাই অ্যালেক্স কিউস্যাকের করা শেষ ওভারে প্রয়োজনীয়তা নেমে আসে সাত রানে।
কিন্তু মুপারিওয়া ও রেজিস চাকাবভা দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে পারেননি। প্রথম বলেই চাকাবভাকে (১৬ বলে ১৭) বোল্ড করেন কিউস্যাক। তৃতীয় বল তুলে মারতে গিয়ে উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন মুপারিওয়া (৭ বলে ১৮)। আইরিশরাও মেতে ওঠে নাটকীয় জয়ের আনন্দে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭৯ রানে দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে হারানোর পর এড জয়েস ও অ্যান্ডি ব্যালবার্নির দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়ায় আইরিশরা। ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ ১৩৮ রানের জুটি গড়েন দুজনে।
তৃতীয় শতকের দেখা পাওয়া জয়েসের ১০৩ বলে ১১২ রানের ইনিংসে ছিল নয়টি চার ও তিনটি ছক্কা। ব্যালবার্নি ছিলেন আরো আক্রমণাত্মক। তাঁর ৭৯ বলে ৯৭ রানের ইনিংস সাজানো সাতটি চার ও চারটি ছক্কায়।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নেন তেনদাই চাতারা ও শন উইলিয়ামস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আয়ারল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩৩১/৮ (পোর্টারফিল্ড ২৯, স্টার্লিং ১০, জয়েস ১১২, ব্যালবার্নি ৯৭, কেভিন ২৪, উইলসন ২৫, মুনি ১০, নিয়াল ২, ডকরেল ৫*, কিউস্যাক ২*; চাতারা ৩/৬১, উইলিয়ামস ৩/৭২, পানিয়াঙ্গারা ১/৬৯)
জিম্বাবুয়ে : ৪৯.৩ ওভারে ৩২৬ (চিভাভা ১৮, রাজা ১২, মায়ার ১১, মাসাকাদজা ৫, টেলর ১২১, উইলিয়ামস ৯৬, আর্ভিন ১১, চাকাবভা ১৭, পানিয়াঙ্গারা ৫, মুপারিওয়া ১৮, চাতারা ১*; কিউস্যাক ৪/৩২, মুনি ২/৫৮, কেভিন ২/৯০, ডকরেল ১/৫৬, ম্যাকব্রাইন ১/৫৬)
ফল : আয়ারল্যান্ড পাঁচ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: এড জয়েস।