লন্ডনে আফ্রিকান অ্যাথলেটের ছন্নছাড়া জীবন
স্বপ্ন ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা স্প্রিন্টার হওয়ার। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে ৪x১০০ মিটার রিলে দৌড়ে অংশও নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন লন্ডনের রাস্তায় ছন্নছাড়া জীবন কাটছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের অ্যাথলেট জিমি থোরোনকার। ইবোলার ভয়াল ছোবলে হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি।
কমনওয়েলথ গেমস শেষ হওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না থোরোনকার। সম্প্রতি তাঁকে খুঁজে পেয়েছেন ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকার এক সাংবাদিক। পত্রিকাটির কাছে নিজের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেছেন তিনি।
কমনওয়েলথ গেমস চলার সময়ই পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যু সংবাদ পান থোরোনকা। দেশে ফিরলে ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় গ্লাসগো থেকে লন্ডনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু গ্লাসগো স্টেশনে ব্যাগ-টাকাপয়সা-পাসপোর্ট হারিয়ে পড়ে যান মহাবিপদে। সেই সময়ের ভীতিকর অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে থোরোনকো বলেছেন, ‘আমি পুলিশের কাছে যেতে ভয় পেয়েছিলাম। কারণ তারা আমাকে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখতে পারত। পরে স্টেশনেই কয়েকজনের কাছে অর্থ সাহায্য চাই লন্ডনে যাওয়ার ভাড়া জোগাড় করার জন্য। তাতে তারা সাড়া দিয়েছিল।’
কিন্তু লন্ডনে এসে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় থোরোনকাকে। ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে পরিবারের কয়েক সদস্যের মৃত্যুসংবাদ পান একটা টেলিভিশন চ্যানেল থেকে। তারপর থেকে পার্কে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন আর ভিক্ষা করে কোনোমতে বেঁচে আছেন তিনি। এক সময় বিশ্বসেরা অ্যাথলেট হওয়ার স্বপ্ন দেখা থোরোনকা এখন আত্মহত্যার কথাও ভাবছেন, ‘কোনো-কোনো দিন মনে হয় এভাবে আর বেঁচে থাকতে পারব না। তখন আত্মহত্যা করার ইচ্ছা হয়। আমার স্বপ্ন ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা অ্যাথলেট হওয়ার। কিন্তু এখন তো তার কোনো সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছি না।’