ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা অধিনায়কের তালিকায় মাশরাফি
২০১৫ সালের কথা কখনো ভুলতে পারবে না বাংলাদেশের ক্রিকেট। বছরটা ঠিক যেন স্বপ্নের মতো কেটেছিল। ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাশক্তিদের ধরাশায়ী করে বারবার সাফল্যের আনন্দে মেতে উঠেছিল পুরো বাংলাদেশ। যাঁর নেতৃত্বে স্মরণীয় বছর কাটিয়েছে বাংলাদেশ দল, সেই মাশরাফি বিন মুর্তজা সাফল্যের দারুণ একটা স্বীকৃতি পেয়েছেন। ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা অধিনায়কের তালিকায় মাশরাফির নামও আছে। মনোনয়ন পাওয়া বাকি চারজন হলেন ভারতের বিরাট কোহলি, পাকিস্তানের মিসবাহ-উল-হক, ইংল্যান্ডের অ্যালেস্টার কুক ও নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। বিস্ময়করভাবে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া মাইকেল ক্লার্কের জায়গা হয়নি এই তালিকায়।
২০১৪ সালের শেষের দিকে মাশরাফি যখন অধিনায়ক হয়েছিলেন, বাংলাদেশের তখন ভীষণ দুরবস্থা। ক্রমাগত ব্যর্থতায় দলের আত্মবিশ্বাসই চুরমার হয়ে গিয়েছিল বলা যায়। তবে মাশরাফি নেতৃত্ব নেওয়ার পরই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ দল। শুরুটা হয়েছিল জিম্বাবুয়েকে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে। তারপর বিশ্বকাপে চমকপ্রদ পারফরম্যান্স। ইংল্যান্ডকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। তবে ভারতের বিপক্ষে শেষ আটের লড়াইয়ে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল।
সেই ‘প্রতিশোধ’ অবশ্য ভালোমতোই নিয়েছিল মাশরাফির দল। এপ্রিলে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পর জুনে ভারতকে ‘বধ’ করেছিল বাংলাদেশ। পরের মাসে দক্ষিণ আফ্রিকানরাও হার মেনেছিল মাশরাফি-সাকিবদের হাতে। নভেম্বরে জিম্বাবুয়েকেও হোয়াইটওয়াশ করে বছরটা সর্বাঙ্গসুন্দর করে রেখেছে বাংলাদেশ দল।
শুধু সাফল্যই নয়, সৌম্য-লিটন-মুস্তাফিজদের মতো তরুণ প্রতিভাও গত বছর পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সাফল্যে এই তরুণদের অবদানও কম নয়। সে জন্য মাশরাফিকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে স্মরণীয় সাফল্য এনে দেওয়া ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ বাংলাদেশের মানুষের মন তো জয় করেছেনই, ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারাও তাঁর পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট।
আর তাই মাশরাফিকে সেরা অধিনায়কের তালিকায় রাখতে দ্বিধা করেনি ক্রিকইনফো। সম্প্রতি একটি নিবন্ধে বাংলাদেশ অধিনায়কের প্রশংসা করে ওয়েবসাইটটি লিখেছে, ‘তিনি একজন অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা, ড্রেসিংরুম থেকে বোর্ডরুম সবখানেই সম্মানিত। বাংলাদেশের ক্রিকেটে যা বেশ বিরল। ভঙ্গুর শরীর নিয়ে লড়াই চালিয়েই তিনি তাঁর দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত করেছেন। ২০১৫ সালের আগে যা কখনো দেখা যায়নি।’