শুধু একজন ভালো মানুষ হতে চাই : মাশরাফি
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। জনগণের ভালোবাসার এই অধিনায়কের নেতৃত্বে ২০১৫ সাল অসাধারণ কাটিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। মাশরাফির অসাধারণ নেতৃত্বের কারণেই চলতি এশিয়া কাপ টি২০-এর ফাইনালে ভারতের মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। ক্রিকেট বিশ্ব মাশরাফিবন্দনায় মুখর হলেও তিনি নিজে একটুকুও পরিবর্তন হননি। বরং নিজেকে ভালো মানুষ করার স্বপ্নে কতটুকু এগোলেন সে কথাই জানালেন মাশরাফি।
এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বলেন, ‘একবার শচীন টেন্ডুলকারের সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, যে কেউ ভালো ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে পারে, কিন্তু সবাই ভালো মানুষ হতে পারে না। এখানে কেউ সবচেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলোয়াড় কি না তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ভালো মানুষ কি না তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমিও সব সময় ভালো মানুষ হতে চেয়েছি। ক্রিকেট কয়েকদিনের বিষয়, কিন্তু আমি ভালো মানুষ হিসেবে সব সময় মানুষের মনে থাকতে চাই। এর মানে এই নয়, আমি কারো কাছে করুণা চাই। আমার পক্ষে যা সম্ভব, তাই নিয়েই আমি সন্তুষ্ট।’
বিডি ক্রিকেট টিমকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বিন মুর্তজা আরো বলেন, ‘আমি খুবই ইনজুরিপ্রবণ। সাতটি অপারেশন হয়েছে আমার। তবে, মানুষের করুণা নিয়ে খেলতে চাই না আমি। বরং আত্মসম্মানের সঙ্গে আমি খেলতে চাই। যতদিন পর্যন্ত খেলব, আমার চেষ্টা থাকবে দলের জন্য কিছু অবদান রাখা। আপনারা দেখেছেন পাকিস্তানের সঙ্গে খেলায় আমি হাফিজের উইকেট নিয়েছি এবং পরে দুটি বাউন্ডারি মেরেছি। এই ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অবদানেই আমি খুশি। কিন্তু এমনটি অব্যাহত থাকতে হবে।’
দেশের সবচেয়ে বড় নায়ক ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধারা—এই কথা আরেকবার স্মরণ করে নড়াইল এক্সপ্রেস বলেন, ‘আমি যেমনটি সব সময় বলি, মুক্তিযোদ্ধারাই হলেন সবচেয়ে বড় নায়ক। আজ আমরা স্বাধীন দেশে আছি শুধু তাঁদেরই জন্য। অন্য যে কারো চেয়ে আমি তাঁদের সম্মান করি। আমি আবিষ্কারকদের সম্মান করি। একটি বড় আবিষ্কার পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারে। আমি চিকিৎসকদেরও সম্মান করি, যাঁরা মানুষের জীবন বাঁচান। মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য আর কী ভালো পেশা হতে পারে? অপর দিকে আমলাদের দিকে তাকান, আমরা হয়তো মানুষকে বিনোদন দিই। তারা আমাদের সম্মান করে। কিন্তু আমরা কি কোনো মানুষের জীবন বাঁচাতে পারি।’
মাশরাফি বিন মুর্তজা আরো বলেন, ‘আমি মন থেকে বিশ্বাস করি যে মানুষ যেভাবে আমাদের সমর্থন করে তা আমাদের খুবই উৎসাহ দেয়। কিন্তু ওই গরিব বালিকার কথা চিন্তু করুন যে সাফ গেমস থেকে দুটি সোনা জয় করে এনেছে। তারও কি একই রকম উৎসাহ প্রাপ্য নয়। আমরা যদি খেলার মানুষ হই, সে আমাদেরই একজন। আমি যা বলতে চাই তা হলো, আপনি যদি সমর্থনই দেন, তবে জীবনের প্রতিটি বিভাগেই সমর্থন দিলেই ভালো হয়। তখনই বাংলাদেশ প্রকৃত উন্নয়ন দেখতে পাবে। শুধু ক্রিকেটে বিনিয়োগ কোনো লাভ হবে না।’