দুর্দান্ত ‘ফিনিশার’ মাহমুদউল্লাহ
ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে রান পাননি। তাই হয়তো জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে তার পর থেকেই দলের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। পরের তিন ম্যাচেই তাঁকে আউট করতে পারেনি প্রতিপক্ষ। বাংলাদেশও টানা তিন ম্যাচে জিতে ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। মাশরাফির দলের অগ্রযাত্রায় মাহমুদউল্লাহর অবদান তাই অসীম। তিনি এখন দলের এক দুর্দান্ত ‘ফিনিশার’।
কিছুদিন আগেও সতীর্থদের প্রিয় রিয়াদকে এমন ভূমিকায় কল্পনা করাই ছিল কঠিন। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দলের অন্যতম নির্ভরতা। বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করার পর থেকেই মাহমুদউল্লাহর ওপর দলের প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল অনেকখানি। তার প্রতিদানও ভালোমতোই দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় ব্যাটিং করে ইনিংস গড়ে তোলার মাধ্যমে।
তবে এবারের এশিয়া কাপে দেখা যাচ্ছে অন্য এক মাহমুদউল্লাহকে। ছয় বা সাত নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে দলকে এগিয়ে দিচ্ছেন জয়ের পথে। প্রথম ম্যাচে সাত রান করে আউট হয়ে গেলেও পরের তিন ম্যাচে তাঁর অবদান ৩৬, ২৩ ও ২২ রান। তিনটিতেই তিনি অপরাজিত। ইনিংসগুলোও এমন সময়ে এসেছে যখন বাংলাদেশ ভীষণ অস্বস্তিতে। আরব আমিরাতের বিপক্ষে শেষ ওভারে মহামূল্যবান ১৭ রান উপহার দিয়েছেন দলকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে অনন্ত চাপের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার কাণ্ডারিও তিনি।
তাঁর হঠাৎ এমন বদলে যাওয়ার রহস্য কী? মাহমুদউল্লাহ জানাচ্ছেন, কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পরামর্শ মেনেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য নিজেকে বদলে ফেলেছেন তিনি, ‘জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে কোচ আমাকে বলেছিলেন আমার ছয় বা সাত নম্বরে ব্যাট করা উচিৎ। যার মানে দাঁড়ায় আমাকে সম্ভবত ফিনিশারের ভূমিকা পালন করতে হবে। তারপরই আমি ফিনিশার হওয়ার মানসিকতা নিয়ে প্র্যাকটিস শুরু করে দিই।’
নতুন দায়িত্বটা যে মোটেও সহজ নয়, তা জানাতেও ভোলেননি গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা মাহমুদউল্লাহ, ‘ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রস্তুতির ধরন একেবারেই আলাদা। এখানে ক্রিজে এসে আমাকে হয়তো ১০/১৫ বলে ২০/২৫ রান করতে হবে। এটা কখনোই সহজ কাজ নয়। এ ধরনের কাজে সফলতা নিশ্চিত করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি খুব গুরুত্বপূর্ণ।’