তাসকিনকে নিয়ে যা বললেন মাশরাফি
সংবাদ সম্মেলনে বেশ হাসিখুশিই থাকতে দেখা যায় বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। মাঝেমধ্যেই মেতে ওঠেন হাসিঠাট্টায়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে মাশরাফি ছিলেন বিমর্ষ। বলে না দিলেও বোঝা যায় যে, তাসকিন আহমেদের বোলিং নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটা কিছুতেই মানতে পারছেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক। সরাসরি না বললেও আইসিসির এই সিদ্ধান্তে যে তিনি সত্যিই খুব ক্ষুব্ধ ও অবাক হয়েছেন, তা স্পষ্টই টের পাওয়া গেছে।
এশিয়া কাপের শুরু থেকেই তাসকিন ছিলেন দারুণ ফর্মে। খুব বেশি উইকেট না পেলেও প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই তাসকিন করেছেন খুবই নিয়ন্ত্রিত বোলিং। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন আম্পায়াররা। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচ শেষেই সন্দেহজনক বলে ঘোষণা করা হয়েছিল তাসকিন ও আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন। চেন্নাইয়ে আইসিসি অনুমোদিত ল্যাবে পরীক্ষা শেষে খুব দ্রুতই প্রকাশ করা হয়েছে ফলাফল। আর সেখানে বলা হয়েছে যে, দুজনের বোলিং অ্যাকশনই অবৈধ।
কিন্তু চেন্নাইয়ের এই পরীক্ষাগারে তাসকিনের পরীক্ষা প্রক্রিয়া যেভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে তা নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নন মাশরাফি। সংবাদ সম্মেলনে বেশ বিমর্ষ গলায় তিনি বলেছেন, ‘যে ম্যাচে তাসকিনের ডেলিভারিকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হয়েছে, সেই ম্যাচের সঙ্গে মিলিয়ে তারা যে পরীক্ষাটা নিয়েছে, সেখানে তাসকিনের একটা বলও অবৈধ ছিল না। যে ম্যাচের ডেলিভারিগুলো নিয়ে সন্দেহ করা হয়েছে, সেই ডেলিভারিগুলোর একটাও অবৈধ ছিল না। কথা হচ্ছে যে, সেই ম্যাচের ডেলিভারিগুলো অবৈধ না, তাহলে আমি তাকে কীভাবে মূল্যায়ন করব? পরীক্ষা দেওয়ার সময় কিছু ডেলিভারি নিয়ে (বাউন্সারের ক্ষেত্রে তিনটা বলে) সমস্যা ছিল। কিন্তু তার ফুল লেংথ ডেলিভারি বা সব কিছুই ১৫ ডিগ্রির ওপরে নাই। আপনি যে ম্যাচটার ওপর ভিত্তি করে টেস্ট করেছেন, সেই ম্যাচের কোনো কিছু অবৈধ না। তাহলে আপনি কি তাঁকে আটকে রাখবেন? নাকি রাখবেন না? আবার পরীক্ষা করবেন নাকি করবেন না? এটাই এখন ব্যাপার।’
চেন্নাইয়ের পরীক্ষাগারে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে নয়টি বাউন্সার করতে বলা হয় তাসকিনকে। সেখানে মাত্র তিনটি বলে তাঁর কনুই বেঁকে গিয়েছিল ১৫ ডিগ্রির বেশি। এ ছাড়া অন্য কোনো ডেলিভারির ক্ষেত্রে সমস্যা পায়নি আইসিসি। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে যে ম্যাচে তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়াররা সন্দেহ পোষণ করেছিলেন, সেই ম্যাচে একটিও বাউন্সার করেননি এই ডানহাতি পেসার।
আইসিসি যে তাসকিনের বোলিং পরীক্ষার সময় নিজেই আইন ভঙ্গ করেছে, তা বেশ জোর দিয়েই বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আইনি পরামর্শক ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। এখন এ ব্যাপারে পাল্টা আপিলও করতে যাচ্ছে বিসিবি।