অকল্যান্ডে ক্রিকেটের জয়গান
‘বিতর্কিত’ আম্পায়ারিং, ভারতীয় দলের ‘অন্যায্য’ সুবিধা প্রাপ্তি—নানা কারণে বিশ্বকাপ নিয়ে অসন্তোষের ঝড় বইছিল ক্রিকেট বিশ্বে। কিন্তু ব্যাট-বলের লড়াই যে আসল কথা, তা প্রথম সেমিফাইনালে প্রমাণ করলেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। রোমাঞ্চ আর নাটকীয়তায় ভরা, পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ চার উইকেটে জিতে কিউইরা আজ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে। তবে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে আসল বিজয়ীর নাম ‘ক্রিকেট’।
খেলা শেষে কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মন্তব্য, ‘দারুণ লাগছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সবসময়ই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। ম্যাচটা ক্রিকেটের জন্য একটা দারুণ বিজ্ঞাপন।’
৪৩ ওভারে ২৯৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডকে ঝড়ো সূচনা এনে দেওয়ার কৃতিত্ব ২৬ বলে ৫৯ রান করা ম্যাককালামের। এরপর কোরি অ্যান্ডারসন আর গ্র্যান্ট এলিয়টের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ঐতিহাসিক জয় এনে দিয়েছে কিউইদের। ৮৪ রানে অপরাজিত থেকে নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক এলিয়টের প্রশংসা করে ম্যাককালাম বলেছেন, ‘আমরা বোলিং-ফিল্ডিং ভালো করেছি। ব্যাট হাতেও আমাদের পারফরম্যান্স ভালো ছিল। গ্র্যান্ট (এলিয়ট) দুর্দান্ত খেলেছে।’
এর আগে ছয়বার সেমিফাইনালে উঠলেও কখনো ফাইনালে খেলা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। সপ্তম প্রচেষ্টায় ফাইনালে উঠতে পেরে দারুণ খুশি ম্যাককালাম, ‘এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্ত। আমরা এই অর্জন উপভোগ করছি। শিরোপা জিততে পারলে দারুণ হবে। তবে ফাইনালের প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছি না। ভারত-অস্ট্রেলিয়া দুটোই খুব ভালো দল। কিন্তু আমরা জানি, সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে আমাদের ভালো সুযোগ আছে। নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত।’
জয়ের কাছাকাছি গিয়েও হেরে যাওয়ায় কান্না আটকাতে পারেননি এবি ডি ভিলিয়ার্স। তবে বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘দারুণ একটা ম্যাচ। এমন প্রাণবন্ত দর্শক আমি বোধহয় আগে দেখিনি। সেরা দলই জয়ী হয়েছে।’
দেশের মানুষকে জয় উপহার দিতে যে প্রাণ দিয়ে লড়ছিলেন, তা জানিয়ে ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছি। তাই কোনো আফসোস নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এভাবে হেরে যাওয়া বেদনাদায়ক। এই হার ভুলতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমরা নিজেদের জন্য খেলছিলাম না। আমাদের মনে শুধু দেশের মানুষের কথা ভাসছিল। আমরা তাঁদের জন্যই খেলেছি। আশা করি তাঁরা এখনো আমাদের নিয়ে গর্বিত।’