স্বর্ণ জিতে কান্না, তারপর বিদায়!
মাস দেড়েক আগে কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরে কেঁদে বুক ভাসিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। তারপর দুঃখে-অভিমানে বিদায় জানিয়েছিলেন জাতীয় দলকে। অস্কার ফিগেরোয়াও কাঁদলেন, তবে তা সুখের কান্না। অলিম্পিকের ভারোত্তোলনে কলম্বিয়াকে স্বর্ণ উপহার দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। তারপর ঘোষণা দিলেন অবসরের।
জীবনে কম কষ্ট করেননি ফিগেরোয়া। মাত্র নয় বছর বয়সে কলম্বিয়ার সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গেরিলাদের যুদ্ধ সপরিবারে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছিল তাঁকে। একসময় দেশে ফিরেছেন, মন দিয়েছেন ভারোত্তোলনে, পেয়েছেন সাফল্যও। কিন্তু দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি। মাস দুয়েক আগে গাড়ি চুরির মামলায় ফেঁসে গিয়ে শাস্তি পেতে হয়েছে তাঁকে।
চার বছর আগে লন্ডন অলিম্পিকে রুপা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ফিগেরোয়াকে। রিওতে তাই স্বর্ণজয়ের প্রতিজ্ঞা নিয়ে পা রেখেছিলেন। সোমবার ভারোত্তোলনের ৬২ কেজি বিভাগে সর্বমোট ৩১৮ কেজি উত্তোলন করে শিরোপা নিশ্চিত করার পর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি, ভেঙে পড়েছেন কান্নায়। তারপর খুলে ফেলেছেন জুতার ফিতা। মিনিট পনেরো পর পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে যখন স্বর্ণপদক গলায় জাতীয় সংগীত গাইছেন, তখনো ফিগেরোয়ার চোখে পানি। তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মেলানো প্রায় দুই হাজার কলম্বিয়ানের চোখেও তখন আনন্দাশ্রু।
পরে সাংবাদিকদের ফিগেরোয়া বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে নিজের অনুভূতি বর্ণনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ভারোত্তোলন করছি। এখন সময় এসেছে অবসর নেওয়ার। তাই আমি জুতা খুলে ফেলেছিলাম।’
সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়েও কথা বলতে হয়েছে কলম্বিয়ার ৩৩ বছর বয়সী ‘জাতীয় বীর’কে। এ ব্যাপারে ফিগেরোয়া বেশ বিরক্তই, ‘এ নিয়ে কথা বলতে বলতে আমি ক্লান্ত। জানি না সাংবাদিকরা কেন বারবার নেতিবাচক প্রশ্ন করছেন আমাকে। আমি আর কোনো দুঃসংবাদের বাহক হতে চাই না। আমি শুধু সুসংবাদ দিতে চাই।’
ব্রাজিল জয় করে দেশে ফেরার পর ফিগেরোয়াকে নিশ্চয়ই আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন শুনতে হবে না!