‘পাস’ হলো না বাংলাদেশের
‘৩৩’ সংখ্যাটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বাংলাদেশের অনেক পরীক্ষার্থীর জন্য। ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩৩ পেলেই উতরে যেতেন অনেকে। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি হয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের জন্য পঞ্চম দিনে মুশফিক-সাব্বিরদের প্রয়োজন ছিল এই ৩৩ রান। বাংলাদেশ এই ক্রিকেটীয় পরীক্ষায় পাস করতে পারবে কি না, এ প্রশ্নেই সরগরম ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
পঞ্চম দিনের প্রথম তিন ওভার সাব্বির ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছিল, পাস মার্কটা জুটিয়েই ফেলবে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে জমাও হয়ে গিয়েছিল ১০ রান। কিন্তু দিনের চতুর্থ ওভারে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন। প্রথম ও তৃতীয় বলে তাইজুল ও শফিউল ইসলামকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন বেন স্টোকস। বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে গেছে ২৬৩ রানে। মাঠ ছাড়তে হয়েছে ২২ রানের হার নিয়ে।
টেস্টে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের আগের আটটি মুখোমুখি লড়াইয়ে একতরফাভাবেই জিতেছিল ইংল্যান্ড। তিনটি ম্যাচে বাংলাদেশকে হারতে হয়েছিল ইনিংস ব্যবধানে। তবে এবার জয়ের জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালিয়েছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে মুশফিক-সাব্বিররা যেভাবে লড়েছেন, তা নিশ্চিতভাবেই আশা জাগাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে।
চট্টগ্রাম টেস্ট স্মরণীয় হয়ে থাকবে অভিষেক হওয়া দুই ক্রিকেটার সাব্বির রহমান ও মেহেদি হাসান মিরাজের জন্য। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে না পারলেও বল হাতে চমক দেখিয়েছেন মিরাজ। দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন আটটি উইকেট। মিরাজের প্রশংসা করেছেন এ সময়ের অন্যতম সেরা স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনও।
ব্যাট হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সাব্বির। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯ রান করে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরতে হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের জাত চিনিয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৬৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন সাব্বির। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির মতো টেস্টেও যে বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা হয়ে উঠতে পারেন, তা ভালোভাবেই প্রমাণ করেছেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। চট্টগ্রামের স্পিনবান্ধব উইকেটে তেমন কিছু করার ছিল না আরেক অভিষিক্ত ক্রিকেটার কামরুল ইসলাম রাব্বির। দুই ইনিংস মিলিয়ে বোলিং করেছেন মাত্র ১৬ ওভার। নিয়েছেন একটি উইকেট।
আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।