মেসির ম্যাজিকে আর্জেন্টিনার দাপুটে জয়
২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকে আর্জেন্টিনাকে অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণ উপহার দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। দেড় দশক পর ফের চীনে খেললেন মেসি, তবে এবার বিশ্বজয়ী ফুটবলার হিসেবে। মেসির এমন স্মৃতিবিজড়িত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বেইজিংয়ের ওয়ার্কার্স স্টেডিয়ামে মেসির নেতৃত্বে মাঠে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দ্যুতি দেখতে মুখিয়ে ছিল পুরো চীন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেসিদের ম্যাচের মাধ্যমে তাদের সেই আক্ষেপ মিটেছে। বিশ্বকাপের শেষ ষোলেতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করা আর্জেন্টিনা আধিপত্য ধরে রাখল প্রীতি ম্যাচেও। মেসি-পেজেলাদের নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছে মেসির দল।
ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে তিন বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। যার ফলও পেতেও খুব বেশি সময় লাগেনি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। কেন তিনি বিশ্বসেরা, মেসি যেন তাই আরও একবার প্রমাণ করলেন। খেলা শুরুর দুই মিনিটের মাথায় গোল করেন এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। এঞ্জো ফার্নান্দেসের বাড়ানো বল থেকে মেসির দুর্দান্ত শটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের অষ্টম মিনিটে দ্বিতীয় বারের মতো এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে ডি মারিয়ার পাস থেকে মেসির ডান পায়ের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের ২০তম মিনিটে প্রথমবারের মতো সংঘবদ্ধ আক্রমণ করলেও ম্যাথিউ লেকির ক্রসে কেউ মাথা ছোঁয়াতে না পারায় গোলের দেখা পায়নি অস্ট্রেলিয়া। শুরুর ১৫ মিনিটে বল দখলে একক আধিপত্য দেখালেও সময়ের সঙ্গে খেলায় ফিরে আসে অস্ট্রেলিয়াও।
ম্যাচের ২৭তম মিনিটে গোলে সুবর্ণ সুযোগ পায় অস্ট্রেলিয়া। তবে, ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি। ডান প্রান্ত দিয়ে কিয়ানু বাকাসের ক্রস থেকে মিচেল ডিউক পা ছোঁয়ালেও বল প্রথমে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক মার্টিনেজের শরীরে ও পরবর্তীতে বারে লেগে ফিরে আসে। দ্রুতই বল নিয়ন্ত্রনে নিয়ে দলকে সেযাত্রায় রক্ষা করেন মার্টিনেজ।
ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে ফের একবার গোলের সুযোগ পান মেসি। তবে এবারও বারের ওপর দিয়ে বল চলে গেলে হতাশ হতে হয় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে। এরপর বাকি সময়ে গোল না হওয়ায় ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতিতে থেকে ফিরে আক্রমণের ধার আরও বাড়ায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে ডি মারিয়ার বাঁ পায়ের জোরালো শট দক্ষতার সঙ্গে ঠেকিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক রায়ান। এরপর ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে ফের গোলের সুযোগ পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় মার্টিনেজ। দক্ষতার সঙ্গে বল দখলে নেন এই গোলরক্ষক।
এরপর ম্যাচের ৬৫তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে মেসিকে ফাউল করলে ফ্রি-কিক পায় আর্জেন্টিনা। তবে, সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মেসি, বল অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে পোস্টের বাইরে চলে যায়।
তবে, মেসি গোল না পেলেও বদলি হিসেবে নেমেই গোলের দেখা পান সেন্টার ডিফেন্ডার জার্মান পেজেলা। ডি পলের ক্রস থেকে অরক্ষিত অবস্থায় থাকা পেজেলা দুর্দান্ত হেডে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে আরও বেশ কয়েকটি আক্রমণ করলেও গোলের ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি আলবিসেলেস্তারা। শেষমেশ ২-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লিওনেল স্কালোনি শিষ্যরা।
এর আগে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ ছিল সকারুদের। তবে মেসি-পেজেলাদের নৈপুন্যে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল অস্ট্রেলিয়ার।