সেনেগালের কাছে এক হালি গোলের লজ্জায় ডুবল ব্রাজিল
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর দুর্দশা যেন কাটছে না পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের। সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচে গিনির বিপক্ষে সান্ত্বনার জয় পেলেও এবার সেলেসাওদের এক হালি গোল হজমের লজ্জায় ডুবিয়ে হারের স্বাদ দিল আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল। সর্বশেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই হার সঙ্গী ব্রাজিলের।
গতকাল মঙ্গলবার (২০ জুন) দিনগত রাতে পর্তুগালের লিসবনে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ৪-২ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়েছে আফ্রিকার দেশ সেনেগাল। এ নিয়ে সেনেগালের সঙ্গে দ্বিতীয় দেখাতেও জিতল না ব্রাজিল। ২০১৯ সালে প্রথম দেখায় ১-১ গোলে ড্র করেছিল দু’দল। সেনাগালের জয়ের নায়ক তাদের সেরা তারকা সাদিও মানে। জোড়া গোল করেছেন তিনি।
২০১৫ সালের পর এই প্রথম দুই গোলের ব্যবধান রেখে ব্রাজিল হেরেছে। ২০১৫ সালে সর্বশেষ চিলির কাছে তারা ২-০ গোলে হেরেছিল। তাছাড়া ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর চার গোল বা তার বেশি হজম করেনি কোনো ম্যাচেই।
লিসবনে প্রথমার্ধে দুই দলই সমান তালে লড়েছে। তবে ছন্দময় ফুটবলে ম্যাচের ১১তম মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বাম প্রান্ত থেকে ক্রস ভিনিসিয়াস জুনিয়রের করা ক্রস থেকে হেড করে জালে বল জড়ান লুকাস পাকেতা।
এরপর ম্যাচের ২৫তম মিনিটে সমতা ফেরায় সেনেগালও। জ্যাকবের কাছ থেকে আসা ক্রস ঠিকমতো সামলাতে পারেনি ব্রাজিলের রক্ষণ। সুযোগ পেয়ে গোল মুখের সামনে থেকে দারুণ ভলিতে ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে দেন দিয়ালো।
সেনেগাল সমতা ফেরানোর আগে অবশ্য পেনাল্টি পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু, ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভার) রিভিউ দেখে সেটি বাতিল করে দেন রেফারি গুস্তাভো কোরেইয়া। মিনিট দুয়েক আগে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন রিচার্লিসন। এর ফলে ১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় সেলেসাওরা।
বিরতির পর ফিরেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে ব্রাজিল। ম্যাচের ৫০তম মিনিটে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। মানের ক্রস থেকে দিয়ালোকের হেড বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজের জালে পাঠান মার্কুইনহোস। এতে ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল।
এরপর ৫৫তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-১ করেন মানে। গুয়েকে রুখে দিলেও দিয়ালোর ফিরতি শট ঠেকাতে পারেননি ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসন। মানের উদ্দেশ্যে তার বাড়ানো বলে জাল কাঁপান বায়ার্ন মিউনিখ তারকা। ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়া ব্রাজিল অবশ্য ৫৮তম মিনিটে ব্যবধান ৩-২ করে। নিজের ভুলের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে দেন মার্কুইনহোস। কর্নার থেকে পাওয়া বল বুক দিয়ে নামিয়ে শুরুতে নিয়ন্ত্রণে নেন ব্রাজিলের এই সেন্টার ব্যাক। তারপর দারুণ শটে ক্রসবারের নিচ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন।
যদিও ব্যবধান কমিয়ে অবশ্য হার এড়াতে পারেনি ব্রাজিল। শেষ দিকে যোগ হওয়া সময়ে বক্সের মধ্যে সেনেগালের খেলোয়াড়কে ফাউল করেন এডারসন। তাতে পেনাল্টি পেয়ে যায় সেনেগাল। স্পট কিক থেকে জোড়া গোল আদায় করে নেন সাদিও মানে।
হতাশার কাতার বিশ্বকাপের পর এখনও স্থায়ী কোনো কোচ নিয়োগ দেয়নি ব্রাজিল। রেমন মেনডেজের অধীনে খেলতে নেমে মরক্কোর কাছে হেরেছিল সেলেসাওরা। গত সপ্তাহে গিনিকে হারিয়ে জয়ে ফিরলেও সেনেগালের কাছে এমন হারে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।