বাঁচা-মরার ম্যাচে রোববার মাঠে নামছে বাংলাদেশ
পাহাড়সম প্রত্যাশা নিয়ে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করলেও প্রথম ম্যাচ শেষেই খাদের কিনারায় বাংলাদেশ। র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লজ্জাজনক হারে প্রথম পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার মুখে সাকিব আল হাসানের দল। গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াই বাংলাদেশের। খেলা শুরু বিকেল সাড়ে তিনটায়।
প্রথম ম্যাচে হতাশাজনক হারে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনোবল তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচে সেই হারানো মনোবল ফিরে পাওয়ায় বড় একটা চ্যালেঞ্জ লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য। তার ওপর সাম্প্রতিক সময়ে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সও স্বস্তিদায়ক নয়।
আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াইটা হবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। সবমিলিয়ে পাকিস্তানের গিয়ে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খুব বেশি সময় পায়নি বাংলাদেশ। ম্যাচের আগেরদিন শুধু অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে সাকিবের দল। এতো কম সময়ে কিভাবে নিজেদের মানিয়ে নেয় হাথুরুসিংহের শিষ্যরা, সেটাই দেখার বিষয়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে মাঝারি মানের বোলারদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটারা যেভাবে ভুগেছে, তাতে আফগানদের বিপক্ষে পরীক্ষাটা যে আরও কঠিন হবে তা তো বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবীদের নিয়ে গড়া বিশ্বমানের স্পিনারদের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে ব্যাটারদের। পাশাপাশি পেস আক্রমণে ফজল হক ফারুকীও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যা শিষ্যদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন হাথুরুসিংহে। ম্যাচের আগের দিন প্রেস কনফারেন্সে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা। নিশ্চিতভাবে এটা একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু তাদের সঙ্গে আমরা সম্প্রতি খেলেছি। যেভাবে খেলেছি এখানে কিছু সফলতাও ছিল। আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য খুবই সতর্ক আছি।’
প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং লাইনআপে বাংলাদেশের দৈন্যতা ফুটে উঠেছে। এক নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া কেউই পারেনি আস্থার প্রতিদান দিতে। তাই ডু অর ডাই ম্যাচে ব্যাটাদের ওপরই থাকবে মূল দায়িত্ব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ব্যর্থ ব্যাটাদের জ্বলে ওঠাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আফগান বোলারদের সামনে কাজটা মোটেও সহজ হবে না।
সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও সাকিবের দলকে সমীহ করছেন আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদী। বাংলাদেশ দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আগের চেয়ে ভালো দল। গত দুই বছর ধরে আমরা একসঙ্গে খেলছি। অতীতে আমরা যা করেছি, তার থেকে আমাদের পারফরম্যান্স ভাল হবে। আপনি বলতে পারবেন না যে, বাংলাদেশ ভাল দল নয়। আমরা চেষ্টা করব ভাল ক্রিকেট খেলার। যে দল দিনশেষে পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে পারবে, তারাই জয়ী হবে।’
পরিসংখ্যান বিবেচনায় বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে আফগানিস্তান। এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত চার বারের দেখায় তিনবারই শেষ হাসি হেসেছে আফগানিস্তান। অবশ্য ওডিআই ফরম্যাটে এগিয়ে আছে বাংলাদেশেই। এখন পর্যন্ত ১৪টি ওয়ানডেতে আটবার জিতেছে বাংলাদেশ, বাকি ছয়বার জিতেছে আফগানিস্তান।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে পরিবর্তন আসার জোরালো সম্ভাবনা আছে। প্রথম ম্যাচে একাদশে দেখা না গেলেও এই ম্যাচে ওপেনিংয়ে নাঈম শেখের জায়গায় এনামুল হক বিজয়কে দেখা যেতে পারে। এছাড়াও যেহেতু আফগানরা ব্যাটিংয়ে কিছুটা পিছিয়ে, তাই একাদশে চার পেসারকে দেখা যেতে পারে। বাংলাদেশ কি পারবে ঘরের মাঠে আফগানদের কাছে সবশেষ ওডিআই সিরিজ হারের দুঃখ ভুলে এশিয়া কাপের দৌড়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে, তা সময়ই বলে দেবে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: তানজিদ হাসান তামিম, এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।
আফগানিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, নাজিবউল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, গুলবাদিন নাইব, আবদুল রহমান, করিম জানাত, ফজল হক ফারুকী।