মিরাজের সাবলীল ব্যাটে মুগ্ধতার হাসি
মুহূর্তটা একবার কল্পনা করুন৷ মেহেদী হাসান মিরাজ ওপেনিংয়ে নামলেন, দলের এক্সপেরিমেন্ট ব্যর্থ করে ফিরলেন খালি হাতে! কী হতো? বাংলাদেশের ক্রিকেটে আচমকাই যেন ওপেনারের খরা। এতটাই নাজুক দশা, মিরাজকে নামতে হলো নাঈম শেখের সঙ্গে উদ্বোধন করতে। ভাগ্যিস নেমেছিলেন! নেমে খেললেন চমৎকার এক ইনিংস, একদম প্রয়োজনের সময়।
এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) মাঠে নামে বাংলাদেশ। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান। মিরাজ-নাঈম জুটি মিলে এদিন হতাশ করেননি ওপেনিংয়ে। ৬০ রান তোলেন তারা। ৩২ বলে ২৮ করে নাঈম আউট হলেও মিরাজ চলছিলেন আপন বেগে।
স্ট্রাইক ঠিক রেখে, রান রেটে নজর দিয়ে একটু একটু করে সাবলীলভাবে গড়েছেন নিজের ও দেশের ইনিংস। অর্ধশতক পার হলেন একটা সময়। ওপেনিংয়ে ততক্ষণে সফল মিরাজ। ওয়ানডেতে এর আগে একবারই ওপেন করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে লিটন দাসকে নিয়ে যোগ করেন ১২০ রান। নিজে আউট হয়েছিলেন ৩২ রানে। বছর পাঁচেক বাদে এশিয়া কাপের মঞ্চেই দ্বিতীয়বার ওয়ানডেতে ওপেন।
১১৫ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক তুলে নেন মিরাজ। বোধহয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণও! আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটাতে বাংলাদেশকে যে কেবল জিতলেই চলত না, বড় ব্যবধানের জয়ও নিশ্চিত করতে হতো। এমন ম্যাচে ঝলক দেখালেন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ১১৯ বলে সাত চার ও তিন ছক্কায় ১১২ রান করে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এর আগে ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হাসান শান্তকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১৯৪ রানের জুটি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারিদের একজন হিসেবে মিরাজকে ভাবা হচ্ছে শুরু থেকেই। নিজের অলরাউন্ড প্রতিভায় প্রতিবার পরিচয় দিয়েছেন দায়িত্বশীলতার। দলের প্রয়োজনে মিরাজ আরও একবার জ্বলে উঠলেন। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস উপহার দিলেন ভীষণ দুঃসময়ে। শুধু তাই নয় ভূমিকা রাখলেন বল হাতেও। তুলে নিলেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তাইতো ম্যাচ শেষে সেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে।