শেষের দৃঢ়তায় ভারতকে চ্যালেঞ্জ দিল বাংলাদেশ
কাগজে-কলমে স্রেফ নিয়মরক্ষার ম্যাচ। ছিল না কোনো প্রত্যাশার চাপ। এমন দিনে নিজেদের অবস্থা আরেকবার যাচাইয়ে সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। তাতে অবশ্য টপ অর্ডারদের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। তবে, শত হতাশার ভিড়ে ব্যাট হাতে আশার আলো হয়ে জ্বলেছেন সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয় ও নাসুম আহমেদ। এ জনের দৃঢ়তায় ভারতকে ২৬৬ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৬৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ করা সাকিব আল হাসান উপহার দিয়েছেন ৮০ রানের চমৎকার ইনিংস। শেষ দিকে দারুণ করা নাসুম উপহার দিয়েছেন ৪৪ রানের ইনিংস।
কলম্বোর প্রেমেদাসায় ম্যাচটিতে চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না বাংলাদেশের। প্রত্যাশার চাপ দূরে ঠেলে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে লাল-সবুজ দল। কিন্তু বরাবরের মতো সেই ওপেনিংয়ে ব্যর্থতা। নাঈম শেখের বদলে একাদশে আসা তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস মিলে ওপেন করেন। এই জুটি টিকেছে মাত্র দুই ওভারে।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই বোল্ড হন লিটন। মোহাম্মদ শামির বল বুঝে ওঠার আগেই স্টাম্প হন তিনি। ফেরেন শূন্যতে। পরের ওভারে আউট হন তানজিদ হাসান তামিম। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম থেমেছেন ১৩ রানে। শার্দুলের ক্রস সিম ডেলিভারিতে ইনসাইড-এজে বোল্ড হয়েছেন এই ওপেনার।
মাত্র ১৫ রানে চাপা পড়া বাংলাদেশের বিপদ আরও বাড়ালেন এনামুল হক বিজয়। ১০ মাস পরে একাদশে ফিরে তিনি টিকলেন মাত্র ১১ বল। শার্দুল ঠাকুরের বলে পুল করতে গিয়ে খাড়া ওপরে ক্যাচ তুলে দেন এনামুল। উইকেটকিপার রাহুল ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি। ৪ রানেই বিদায় এনামুলের। তিন টপ অর্ডারকে হারানোর ধাক্কা মিরাজকে নিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সাকিব। কিন্তু মিরাজও আশা জাগিয়ে পারলেন না থিতু হতে। ১৩ রানে মিরাজ পড়েন অক্ষর প্যাটেলের ফাঁদে।
চার ব্যাটারের বিদায়ের পর উইকেটে আশা জাগান সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়। দুজনে থিতু হয়ে যান উইকেটে। ভারতীয় বোলারদের দেখেশুনে খেলে ৬৫ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সাকিব। তাওহিদও ছুটতে থাকেন দারুণ ছন্দে। ছুটতে থাকা এই জুটিতে বাংলাদেশ আশা দেখে বড় ইনিংসের।
কিন্তু ইনিংসের ৩৩.১তম ওভারে সেই আশা ভেস্তে দেন শার্দুল ঠাকুর। তামিমের মতো সাকিবকেও ইনসাইড-এজে বোল্ড করেন তিনি। ওয়ানডেতে গত ৫০ মাস ধরে সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা সাকিব এবার থামলেন ৮০ রানে। ৮৫ বলে ৬ বাউন্ডারি আর তিন ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস।
সাকিবের বিদায়ে ভাঙে ১০১ রানের জুটি। এরপর উইকেটে এসে হতাশ করেন শামীম। উইকেটের এসে জাদেজার ২০০তম শিকার হন তিনি। ফেরেন মাত্র ১ রানে। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে উইকেটে থিতু ছিলেন হৃদয়। কিন্তু, হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়ে তিনিও ফিরলেন সাজঘরে। ৮১ বলে ৫৪ রান করা হৃদয় ফেরার পর বাকি পথ টানেন নাসুম আহমেদ ও শেখ মেহেদি। বোলার নাসুম দায়িত্ব নেন ইনিংস গড়ার। খেলেন ৪৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংস। মেহেদিও করেন ২৯ রান। ফলে লেজের শক্তিতে ভর করে মোটামুটি লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে বল হাতে ৬৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। ৩২ রানে দুটি নেন মোহাম্মদ শামি। জাদেজার শিকার একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৬৫/৮ (তামিম ১৩, লিটন ০, বিজয় ৪, সাকিব ৮০, মিরাজ ১৩, তাওহিদ ৫৪, শামীম ১, নাসুম ৪৪, মেহেদী ২৯, তানজিম ৯; শামি ৮-১-৩২-২, শার্দুল ১০-০-৬৫-৩, প্রসিদ ৯-০-৪৩-১, অক্ষর ৯-০-৪৭-১, তিলক ৪-০-২১-০, জাদেজা ১০-১-৫৩-১)।