বাংলাদেশের পেস দাপট ছাপিয়ে নিউজিল্যান্ডের লড়াকু পুঁজি
বৃষ্টি, বিশ্রাম ও বিশ্বকাপ ভাবনার মধ্যে নিউজিল্যান্ড সিরিজটা জিততে মরিয়া বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের খোঁজে দুই দল। সেই লক্ষ্যে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের ব্যাটে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৫৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে সফরকারীরা।
বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজকে সেই অর্থে গুরুত্ব দেয়নি দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড। তাই তো অনেককে বিশ্রাম দিয়ে তারা স্কোয়াড সাজিয়েছে। তারপরেও এই সিরিজ এক দিক দিয়ে বাংলাদেশের জন্য গুরত্ব বহন করে। নিউজিল্যান্ডকে দুই ম্যাচে হারাতে পারলে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে উঠে আসবে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে যা বাংলাদেশ দলকে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
আজ শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৫৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি কিউইরা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন শেখ মেহেদী ও খালেদ আহমেদ।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। গত ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করা মোস্তাফিজুর রহমান এই ম্যাচেও বাংলাদেশকে দাপুটে শুরু এনে দেন। দলীয় ১৫ রানের মাথায় মোস্তাফিজের শর্ট ডেলিভারিতে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে তালুবন্দী হন ওপেনার উইল ইয়ং।
প্রথম উইকেটের পর দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। দলীয় ২৬ রানের মাথায় আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেনকে ফেরান দ্য ফিজ। মোস্তাফিজের অফ স্ট্যাম্প করিডোরে করা ডেলিভারিতে মিড অফের ওপর দিয়ে শট গিয়ে স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন অ্যালেন। ১৫ বলে ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর চ্যাড বোসকে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে কিউইরা। যদিও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। মোস্তাফিজের পর এবার উইকেটের খাতায় নাম লেখান অভিষিক্ত পেসার খালেদ হোসাইন। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় নিজের প্রথম ওয়ানডে উইকেট তুলেন নেন ডানহাতি এই পেসার। তার লাফিয়ে ওঠা বলে স্কয়ার লেগের দাঁড়িয়ে থাকা তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলেন দেন চ্যাড। ১৯ বলে ১৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপরই যেন পাল্টে যায় নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকল ও টম ব্লান্ডেলের ১০৫ রানের জুটিতে ভর করে লড়াকু স্কোরের ইঙ্গিত দেয় কিউইরা। দীর্ঘক্ষণ ধরে উইকেট শূন্য থাকা বাংলাদেশ সাফল্য পায় দলীয় ১৩১ রানে। নিজের দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পেয়ে যান খালেদ। ব্যাক অফ লেন্থ ডেলিভারিতে স্কয়ার কাট করতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন নিকলস। মাত্র ১ রানের জন্য ফিফটি পূরণ হয়নি বাঁহাতি এই ব্যাটারের। ৬১ বলে ৪৯ রান করে ফেরেন তিনি।
চতুর্থ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেট হারাতেও খুব বেশি সময় লাগেনি সফরকারীদের। দলীয় ১৫৭ রানের মাথায় শেখ মেহেদীর বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন রবীন্দ্র রাচীন। ১৪ বলে ১০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর দলীয় ১৬৬ রানের মাথায় উইকেটের খাতায় নাম লেখান হাসান মাহমুদ। দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠা টম ব্লান্ডেলকে ফেরান এই ডানহাতি পেসার। হাসানের দুর্দান্ত ইয়র্কারে কোনো জবাব দিতে পারেননি ব্লান্ডেল। তবে আউটে আগে ৬৬ বলে ৬৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন এই ডানহাতি পেসার।
এরপর দলীয় ১৮৭ রানে কোলে ম্যাককনচিকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন নাসুম আহমেদ। তবে ইশ সোদি ও কাইল জেমিসনের ব্যাটে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানায় কিউইরা। তবে সেই জুটিও বেশি লম্বা হতে দেননি মেহেদী। তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় উইকেট। দলীয় ২১৯ রানের মাথায় মেহেদির করা বল মিড অনের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে তার হাতেই ধড়া পড়েন জেমিসন। ২৭ বলে ২০ রান আসে ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে।
শেষমেশ লোয়ার অর্ডারে আর কেউ জ্বলে না উঠায় ২৫৪ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড : ৪৯.২ ওভারে ২৫৪ (অ্যালেন ১২, ইয়ং ০, চ্যাড ১৪, নিকলস ৪৯, ব্লান্ডেল ৬৮, রাচীন ১০, কোলে ২০, সোদি ৩৫, জেমিসন ২০, ফারগুসন ১৩, বোল্ট ১ ; মোস্তাফিজ ১০-১-৫৩-২, হাসান ১০-১-৪৬-১, খালেদ ৯.২-১-৬০-৩, মেহেদী ১০-০-৪৫-৩, নাসুম ১০-০-৪৪-১)