বিশ্বকাপ দল বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের শক্তিমত্তা, দুর্বলতা ও সম্ভাবনা
সময়ের হিসাবে মাত্র আট দিন। এরপরই পর্দা উঠবে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের। ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসরে অংশ নেবে ১০টি দল। বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সবচেয়ে বড় আসর এই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতের ১০টি ভিন্ন শহরের ১০টি স্টেডিয়ামে সব মিলিয়ে মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা, শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা।
সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখা কঠিন। কারণ সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের পর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে রীতিমত মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কন্ডিশনে খেলা বলেই আশাবাদী লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের শক্তিমত্তা বা দুর্বলতা কি, সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড : বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। এখন পর্যন্ত ৬টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা বাংলাদেশ চারবারই গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে গেছে। একবার কোয়ার্টার ফাইনাল ও সুপার এইটে ওঠে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের স্কোয়াড পর্যালোচনা : এখন পর্যন্ত যতগুলো দল বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে, তাদের প্রায় সবাই নতুন কোনো মুখ রেখেছে দলে। সেদিক থেকে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে। ১৫ সদস্যের দলে ৮ জনই নতুন মুখ। ২ ম্যাচ খেলে তানজিম হাসান সাকিব আর ৪ ম্যাচ খেলে তানজিদ তামিম দলে সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়াও প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ খেলবে শরিফুল, তাওহিদ, শান্ত, হাসান, শেখ মেহেদী ও নাসুমের মতো ক্রিকেটাররা। দলে আছে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের মতো অভিজ্ঞরা।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্কোয়াড : তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের শক্তিমত্তা : ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ হলেও বাংলাদেশকে খুব একটা পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। কারণ কন্ডিশন বিবেচনায় বাংলাদেশ অন্য অনেক দল থেকে এগিয়ে থাকবে। পাশাপাশি সাকিব-লিটনদের আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতাও কাজে আসবে। বাংলাদেশের মূল শক্তিমত্তার জায়গা বোলিং ইউনিট। পেস ডিপার্টমেন্টে তাসকিনের নেতৃত্বে হাসান-শরিফুলদের পাশাপাশি সাকিব ও মুস্তাফিজরা নিজেদের দিনে বেশ ভয়ঙ্কর। আর স্পিন আক্রমনে অধিনায়ক সাকিবের নেতৃত্বে নাসুম ও মিরাজরাও প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ভোগাতে পারে।
বাংলাদেশের দুর্বলতা : বাংলাদেশের অন্যতম দুর্বলতা ব্যাটারদের ব্যর্থতা। সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে বোলাররা আস্থার প্রতিদান দিলেও ব্যাটাররা ছিলেন আড়ালে। বিশেষ করে ওপেনিং বাংলাদেশের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ। একদিকে অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল দলে নেই, এর ওপর লিটন দাস ও তানজিদ তামিমের ব্যাটে নেই রান। এছাড়া মিডল অর্ডারে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারছেন না। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য ব্যাটিংয়ে ভালো করাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের সম্ভাবনা : ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে শেষ করা বাংলাদেশের চোখ বিশ্বকাপ জয়ে। যদিও কাজটা বেশ কঠিন সাকিবের দলের জন্য। তিন ডিপার্টমেন্টে অলরাউন্ড ক্রিকেট খেলতে পারলে, বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাই যায়।