দক্ষিণ আফ্রিকার রান পাহাড়ে আটকে গেল শ্রীলঙ্কা
টস জিতে বোলিং নেওয়ার জন্য আফসোস করতে পারে শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিং উইকেটে আগে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা যে বুমেরাং হয়েছে লঙ্কানদের জন্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা।
আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ৪২৮ রানের সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপ ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। জবাবে ৪৪.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানে থামে লঙ্কানরা। ১০২ রানের জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করল দক্ষিণ আফ্রিকা।
৪২৯ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। দলীয় ১ রানের মাথায় হারায় ওপেনার পাথুম নিশানকার উইকেট। এরপর অবশ্য কুশল পেরেরাকে নিয়ে জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস। মারকুটে ব্যাটিংয়ে ২৫ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেন মেন্ডিস। তবে দলীয় ৬৭ রানের সময় কুশল পেরেরার বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ১৫ বলে ৭ রান করেন পেরেরা
এরপর অবশ্য নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় লঙ্কানরা। দলীয় ১০৯ রানের মাথায় পেরেরার বিদায়ে বড় হোচট খায় শ্রীলঙ্কা। ৪২ বলে ৭৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর চারিথ আসালাঙ্কা মাঝে কিছুটা স্বস্তি দিলেও তিনিও ফেরেন সাজঘরে। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৫ বলে ৭৯ রান।
এরপর অধিনায়ক দাসুন শানাকা লোয়ার অর্ডার ব্যাটরদের নিয়ে লড়াই করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ৬২ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে দলীয় ২৯১ রানে সাজঘরে ফেরেন শানাকা। তার বিদায়ে পর দলীয় ৩২৬ রানে থামে শ্রীলঙ্কা।
এর আগে, টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা যে ঠিক হয়নি লঙ্কানদের, তাই যেন প্রমাণ করলেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। দলীয় ১০ রানের মাথায় অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে হারালেও পরবর্তী জুটিতে দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন ডি কক-ডুসেন। শ্রীলঙ্কার বোলারদের পাত্তা না দিয়েই মারকুটে ব্যাটিং করতে থাকেন এই দুই ব্যাটার।
দুজনেই তুলেন নেন সেঞ্চুরি। এরপর দলীয় ২১৪ রানে মাথিশা পাথিরানার বলে ধনঞ্জয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডি কক। সাজঘরের ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৪ বলে ১০০ রান। এরপর এইডেন মার্করামকে নিয়ে জুটি গড়েন ডি কক। এই দুইজনের ৫০ রানের জুটিতে দলীয় সংগ্রহ ২৫০ রান পার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও দলীয় ২৬৪ রানে বিদায় নেন ডুসেন। ১১০ বলে ১০৮ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
এরপর হেনরিখ ক্লাসেনকে নিয়ে রীতিম তান্ডব চালায় মার্করাম। এই দুইজনের ৭৮ রানের জুটিতে রান পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও দলীয় ৩৪২ রানের সময় ব্যক্তিগত ৩২ রানে আউট হন ক্লাসেন। এরপর ডেভিড মিলারকে নিয়ে ব্যাট হাতে ফের একবার ঝড় তোলেন মার্করাম। ৪৯ বলে তুলে নেন বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরি। দলীয় ৩৮৩ রানে ব্যক্তিগত ১০৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন মার্করাম। এরপর জেনসেনকে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন মিলার। এই দুইজনের ব্যাটে রেকর্ড গড়ে প্রোটিয়ারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলঙ্কা : ৪৪.৫ ওভারে ৩২৬ (নিশানকা ০, পেরেরা ৭, মেন্ডিস ৭৬, সামারাবিক্রমা ২৩, আসালাঙ্কা ৭৯, ধনঞ্জয়া ১১, শানাকা ৬৮, ভেল্লালাগে ০, রাজিথা ৩২, পাথিরানা ৫, মধুশঙ্কা ৪; এনগিদি ৮-১-৪৮-১, জেনসেন ১০-০-৯২-২, রাবাদা ৭.৫-০-৫০-২, মহারাজ ১০-০-৬২-২, কোয়েতজি ৯-০-৬৮-৩)
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৫০ ওভারে ৪২৮/৫ (ডি কক ১০০, বাভুমা ৮, ডুসেন ১০৮, মার্করাম ১০৬, ক্লাসেন ৩২, মিলার ৩৯, জেনসেন ১২; রাজিথা ১০-১-৯০-১, মধুশঙ্কা ১০-০-৮৬-২, শানাকা ৬-০-৩৬-০, সিলভা ৪-০-৩৯-০, পাথিরানা ১০-০-৯৫-১, ভেল্লালাগে ১০-০-৮১-১)
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ১০২ রানে জয়ী।