বাংলাদেশকে হতাশ করে রানের পাহাড়ে ইংল্যান্ড
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। বোলারদের নৈপুণ্যে উড়িয়ে দেয় আফগানিস্তানকে। সেই বাংলাদেশই আজ বোলিংয়ে দেখল মুদ্রার উল্টোপিঠ। পেসার কিংবা স্পিনার, কেউই সুবিধা করতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটারদের সামনে। ডেভিড মালানের সেঞ্চুরি ও জো রুট-জনি বেয়ারস্টোর হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে পাহাড়সম রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ধর্মশালায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষে টসে জিতে বোলিং বেছে নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাকে হতাশ করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান তোলে ইংল্যান্ড।
জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ধর্মশালার একই মাঠে আজ বাংলাদেশের বোলারদের লেগেছে ভীষণ অসহায়। ইনিংসের শুরু থেকে চড়াও হন দুই ওপেনার বেয়ারস্টো ও মালান। দুজন মিলে ওপেনিং জুটিতে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ১১৫ রান। দলের বিপদে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে আসেন সাকিব। ১৭.৫ ওভারে বেয়ারস্টোকে আউট করে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন অধিনায়ক। ৫৯ বলে ৫২ রান করে সাকিবের বলে বোল্ড হন বেয়ারস্টো। সাকিবকে ফ্লিক করতে গিয়ে বল মিস করে আউট হন তিনি।
বেয়ারস্টো ফিরলেও রুটকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মালান। মালান-রুট মিলে করেন ১৫১ রানের জুটি। ১০৭ বলে ১৬ চার ও পাঁচ ছক্কায় ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন মালান। ৩৮ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ইনসুইং ডেলিভারিতে তাকে পরাস্ত করেন শেখ মেহেদি হাসান। মালানকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন মেহেদি। সেইসঙ্গে বিশ্বকাপে মেহেদি পান নিজের প্রথম উইকেট।
বাংলাদেশকে তৃতীয় সাফল্য এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ১০ বলে ২০ রান করে ঝড়ের আভাস দেওয়া ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে বোল্ড করেন তিনি। শরিফুলের নিচু হওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট-বলের সংযোগ ঘটাতে পারেননি বাটলার।
বাটলার আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ড হারায় সেট ব্যাটার রুটকে। সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়া রুটকেও থামান শরিফুল। উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে ৬৮ বলে ৮২ রান করা রুটকে সাজঘরের পথ দেখান শরিফুল। রুটের পর লিয়াম লিভিংস্টোনকে শূন্য রানে বোল্ড করে পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশি এই পেসার।
হ্যারি ব্রুককে সাজঘরের পথ দেখান শেখ মেহেদি। লিটনের ক্যাচ বানিয়ে তাকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ব্রুক করেন ১৫ বলে ২০ রান। ১১ রান করা স্যাম কারানকেও ফেরান মেহেদি। দুর্দান্ত ড্রাইভে স্ট্রেইটে ক্যাচ লুফে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মেহেদির বলেই অসাধারণ আরেকটি ক্যাচ ধরেন শান্ত। আদিল রশিদ বলটা মেরেছিলেন সোজা বাউন্ডারিতে। সেখানে থাকা তাওহিদ হৃদয় বলটা ধরেন ঠিকই, তবে চলে যাচ্ছিলেন সীমানা দড়ির ওপারে। এর আগেই বল ছুঁড়ে দেন শান্তর দিকে। অনায়াসে সেটি ধরেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান করে ইংলিশরা।
বাংলাদেশের পক্ষে ৭১ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন অভিষিক্ত শেখ মেহেদি। তিন উইকেট নিতে শরিফুল দেন ৭৫ রান। একটি করে নেন সাকিব ও তাসকিন আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩৬৪/৯ ।(বেয়ারস্টো ৫২, মালান ১৪০, রুট ৮২, বাটলার ২০, ব্রুক ২০, লিভিংস্টোন ০, কারান ১১, ওকস ১৪, রশিদ ১১, উড ৬*, টপলি ১*; মুস্তাফিজ ১০-০-৭০-০ , তাসকিন ৬-০-৩৮-১, শরিফুল ১০-০-৭৫-৩, মেহেদি ৮-০-৭১-৪, সাকিব ১০-০-৫২-১, মিরাজ ৬-০-৫৫-০)।