লড়াই করেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারল পাকিস্তান
চলতি বিশ্বকাপে রান তাড়ায় নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড ৩৪৫ রান তাড়া করে জিতেছে দলটি। সুযোগ ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে যাওয়ার। তবে, মিডলঅর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেটা হয়নি। বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় হারের দেখা পেল বাবর আজমের দল।
আজ শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩৬৭ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৪৫.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৩০৫ রানে থামে পাকিস্তান। ৬২ রানের জয় পায় কামিন্সের দল।
৩৬৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা মনমতো হয় পাকিস্তানের। দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হকের ব্যাটে শতরানের জুটি গড়ে পাকিস্তান। দলীয় ১৩৪ রানে স্টোয়নিসের বলে শফিকের বিদায়ে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ৬১ বলে ৬৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার।
এরপর আরেক ওপেনার ইমামকে সাজঘরে ফেরাতেও খুব বেশি সময় নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ১৫৪ রানে স্টোয়নিসের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ইমাম। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৭১ বলে ৭০ রান। এরপর অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন রিজওয়ান। তবে, তাতে সাফল্য মেলেনি। দলীয় ১৭৫ রানের বাবরের বিদায়ে বড়সড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান।
এরপর মিডলঅর্ডারের ব্যাটাদের নিয়ে লড়াই করার চেষ্টা করেন রিজওয়ান। তবে, সেই লড়াইও থামে রিজওয়ানের বিদায়ে। দলীয় ২৭৪ রানে জাম্পার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর আর কোনো ব্যাটার দায়িত্ব নিতে না পারায় ৩০৫ রানে থামে পাকিস্তান।
গত কয়েকটি ম্যাচে ব্যাট হাতে নিজেদের সেরাটা দিতে না পারলেও এই ম্যাচে শতভাগ উজাড় করে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। বিশেষ করে দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার তো রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছেন।
আক্রমণাত্নক ব্যাটিংয়ে দুজনই তুলে নেন চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম সেঞ্চুরি। কোনোভাবেই এই দুজনকে থামাতে পারছিল না পাকিস্তানি বোলাররা। অবশেষে দলীয় ২৫৯ রানের মাথায় শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে উসামা মিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মার্শ। আউটের আগে ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ১০৮ বলে ১২১ রান। এক বল পরেই রানের খাতা না খুলতেই সাজঘরে ফিরতে হয় গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। এরপর স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে ফের বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। যদিও তাতে সফল হয়নি। দলীয় ২৮৪ রানে উসামা মিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্মিথ। ৯ বলে সাত রান আসে এই ডানহাতির ব্যাট থেকে।
এরপর মার্কাস স্টোয়নিসকে নিয়ে জুটি গড়েন ওয়ার্নার। এই জুটিতে আসে ৪১ রান। দলীয় ৩২৫ রানে ফেরেন ওয়ার্নার নিজে। ১২৪ বলে খেলেন ১৬৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস, যা চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ। এরপর লাবুশেন ও স্টোয়নিসদের দৃঢ়তায় ৩৬৭ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের হয়ে পাঁচ উইকেট নেন আফ্রিদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া : ৫০ ওভারে ৩৬৭/৯ (ওয়ার্নার ১৬৩, মার্শ ১২১, ম্যাক্সওয়েল ০, স্মিথ ৭, স্টোয়নিস ২১, ইঙ্গলিশ ১৩, লাবুশেন ৮, কামিন্স ৬, স্টার্ক ২, হ্যাজেলউড ০, জাম্পা ; আফ্রিদি ১০-১-৫৪-৫, হাসান ৮-০-৫৭-০, ইফতিখার ৮-০-৩৭-০, রউফ ৮-০-৮৩-৩, মির ৯-০-৮২-১, নেওয়াজ ৭-০-৪৩-০)
পাকিস্তান : ৪৫.৩ ওভারে ৩০৫/১০ (শফিক ৬৪, ইমাম ৭০, বাবর ১৮, রিজওয়ান ৪৬, শাকিল ৩০, ইফতিখার ২৬, নেওয়াজ ১৪, মির ০, আফ্রিদি ১০, হাসান ৮, হারিস ০; স্টার্ক ৮-০-৬৫-১, হ্যাজেলউড ১০-১-৩৭-১, কামিন্স ৭.৩-০-৬২-২, জাম্পা ১০-০-৫৩-৪, ম্যাক্সওয়েল ৫-০-৪০-০, স্টোয়নিস ৫-০-৪০-২)
ফলাফল : অস্ট্রেলিয়া ৬২ রানে জয়ী।