কিশোর কুমারের বাংলোয় কোহলির 'ওয়ান এইট কমিউন'
বাইরের রূপ খুব একটা বদলায়নি। এমন কি বাইরে দাঁড়িয়ে আঁচ করা মুশকিল ভেতরটা কতখানি বিলাসবহুল। মুম্বাইয়ের বিখ্যাত জহু বিচ এলাকার কাছেই রেস্তোরাঁটির সামনে উড়ছে ভারতের পতাকা। যার নিচে লেখা—‘কিশোর কুমারের বাংলো গৌরী কুঞ্জ।’
সুরের জাদুতে কয়েক প্রজন্মকে বেধে রাখা কিশোর কুমারকে কে না চেনে! ক্রিকেট মাঠের বড় তারকা বিরাট কোহলিও তার ভক্ত। কিশোর কুমারকে চোখে না দেখলেও তার সুরের প্রেমে পড়েছেন ঠিকই। তাইতো প্রিয় তারকার স্মৃতি জড়ানো বাংলো কেনার সুযোগ হাতছাড়া করেননি। যার গান শুনে বড় হয়েছেন সেই কিশোর কুমারের বাংলো গেল বছর ১৯ কোটি রুপিতে কিনে নিয়েছেন কোহলি।
যেখানে একটা সময় সুরের চর্চা চলত সেখানটায় বানিয়ে ফেলেছেন রেস্তোরাঁ। ভোজনরসিকদের জন্য তৈরি চমৎকার এই রেস্তোরাঁর নাম—‘ওয়ান এইট কমিউন’। ওয়ান-এইট তথা ১৮ মানে তো সবার জানা। এটি বিরাট কোহলির জার্সি নম্বর। আর কমিউন মানে হলো, সবার জন্য। সোজা বাংলায় বললে—এই রেস্তোরাঁটি সবার জন্য।
অবশ্য নামে সবার জন্য হলেও সেটা যে ভুল তার টের পাওয়া গেল খাবার অর্ডার করার পর। রেস্তোরাঁয় প্রবেশের পর জেনে নেই বিরাট কোহলির পছন্দের খাবার কোনটি। ম্যানেজারের থেকে জানলাম—এই রেস্তোরাঁয় ভারতীয় তারকার প্রিয় খাবার মাশরুম গুগলি ডিমসাম, সুপার ফুড সালাদ ও টম খা চিকেন সুপ। একজনের এই খাবারের সাথে পানি যোগ করলে দাম পড়ে প্রায় ২৬০০ রুপি। অর্থাৎ এটি যে সবার জন্য নয় তা আর বলার অপেক্ষায় রাখে না। তবে, এত বড় ক্রিকেটারের প্রিয় খাবার এই আড়াই থেকে তিন হাজার রুপিতে খাওয়াটাও মন্দ নয়।
রেস্তোরাঁয় গিয়ে তাই কোহলির পছন্দের খাবারই বেছে নেই। খাবারের মান ও স্বাদ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। টাকা যে বিফলে যাবে না সেটা পরিস্কার মোটামুটি। সেই সাথে রেস্তোরাঁর ভেতরের পরিবেশ মুগ্ধ করবে যে কাউকে।
রেস্তোরাঁর শুরুতেই সারি সারি রশি টানিয়ে ভিন্ন এক রূপ দেওয়া। পাশে সোভা পাচ্ছে সারি সারি বইয়ে সাজানো শোকেজ। এরপর ভেতরে প্রবেশ করলে চোখ ধাধানো আসবাবপত্র আর বিভিন্ন সুভিনিয়রে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো—রেস্তোরাঁটি গ্লাস নির্মিত। তাই আপনি ভেতরে বসলেও মনে হবে প্রকৃতির মাঝেই বসে বসে খাচ্ছেন। অর্থাৎ শীতল গ্লাস স্ক্রিনের সাথে পাচ্ছেন রুফটফের স্বাদ।
পুরো রেস্তোরাঁ ঘুরলে অবশ্য কোহলির ব্যাট-বল জার্সি কিছুই পাবেন না। তবে, বড় করে দেয়ালে আঁকা ভারতীয় তারকার সিগনেচার ঠিকই নজর কাড়বে। সাদা দেয়ালে সোনালি রঙে ঝলমল করছে কোহলির সাইন।
রেস্তোরাঁ ব্যবসায় অবশ্য নতুন নন কোহলি। মুম্বাইয়ে ‘ওয়ান এইট কমিউন’ – এর ষষ্ঠ শাখা এটি। নিজ শহর দিল্লিতে যাত্রা শুরু করা রেস্তোরাঁটি আছে কলকাতা ও পুনেতেও। মুম্বাই শাখার ম্যানেজারের সঙ্গে আলাপ হতে তিনি বলেন, ‘এই রেস্তোরাঁটি এখানে খুব জনপ্রিয়। যখন তখন আসলে আসন পাওয়া মুশকিল। তাই আসার আগে রিজার্ভেশন দিতে হয়।’
ম্যানেজার জানালেন, সতীর্থদের নিয়ে কখনো আসা না হলেও স্ত্রী আনুশকাকে নিয়ে এই রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন কোহলি। আসবেনই বা না কেন? যে কিশোর কুমারের প্রেমে তিনি মজেছেন সেই তারকার ঢেরায় না আসলে কি আর ভালোবাসা সতেজ থাকে? যারা একই সাথে কোহলি ও কিশোর কুমারের ভক্ত তাদের জন্য এই গৌরী কুঞ্জ হতে পারে আরও স্পেশাল। তাই মুম্বাই এলে গৌরী কুঞ্জে বিরাট ও কিশোর কুমারের ডেরায় একবার তো আসাই যায়!