স্পিন ঝলকে শেষ বিকেলে বাংলাদেশের হাসি
বাংলাদেশকে স্পিন দিয়ে কুপোকাত করেছে নিউজিল্যান্ড। নিজেরাও যে একই অস্ত্রে ঘায়েল হবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পেরেছিল কি দলটি? ভাবার আগেই যে স্কোরবোর্ডে নেই পাঁচ উইকেট। বাংলাদেশকে অল্পতে গুটিয়ে স্বস্তিতে থাকার বদলে দুঃশ্চিন্তা নিয়ে দিন শেষ করেছে নিউজিল্যান্ড। আর ব্যাটিংয়ের হতাশা কাটিয়ে স্পিনারদের জাদুতে শেষ বিকেলটা রাঙিয়ে নিল বাংলাদেশ। আলোকস্বল্পতায় ম্যাচ একটু আগে শেষ না হলে হয়তো আরও উইকেট পেতেন বাংলাদেশের স্পিনাররা।
ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন ব্যাট হাতে ৬৬.২ ওভারে ১৭২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে নিউজিল্যান্ড দিন শেষ করে ১২.৪ ওভারে পাঁচ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে।
দলীয় ২০ রানে কিউইদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১১ রান করা ডেভন কনওয়েকে বোল্ড করেন তিনি। দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। চার রান করা টম লাথামকে বানান নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ। প্রথম টেস্টের নায়ক তাইজুল এরপর ফেরান ১ রান করা হেনরি নিকোলসকে। শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে পেরেন নিকোলস।
কেইন উইলিয়ামসন হতে পারতেন বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ। কিন্তু, তাকে দাঁড়াতেই দেননি মিরাজ। শাহাদাত হোসেন দিপুর ক্যাচ বানিয়ে ১৩ রানে ফেরান এই তারকাকে। একই ওভারে টম ব্লান্ডেলকে শূন্য রানে ফেরান মিরাজ। এবার লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তাকে। কিউইদের হয়ে ক্রিজে লড়াই করছেন ডেরিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস।
বাংলাদেশের পক্ষে তিন উইকেট নেন মিরাজ। দুই উইকেট পান তাইজুল।
এর আগে আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু করেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। দলীয় ২৯ রানের মাথায় মিচেল স্যান্টনারের বলে তুলে মারতে গিয়ে উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়েন জাকির। ২৪ বলে ৮ রান আসে এই বাঁহাতির ব্যাট থেকে।
এর পরের ওভারেই এজাজ প্যাটেলের বলে লাথামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জয়। ৪০ বলে ১৪ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এই দুইজনের বিদায়ের পর অভিজ্ঞ মমিনুল হক ও অধিনায়ক নাজমুল শান্তও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি। দলীয় ৪১ রানে মমিনুল ও ৪৭ রানে শান্ত বিদায় নিলে হতাশা বাড়ে স্বাগতিকদের। মমিনুল পাঁচ ও শান্ত ৯ রান করেন।
এরপর তরুণ ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দিপুকে সঙ্গী করে চাপ সামাল দেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। এই দুইজনের ব্যাটে স্বস্তি নিয়ে লাঞ্চে গেলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ১০৪ রানের মাথায় কাইল জেমিসনের করা বলে স্ট্যাম্পে লাগার আশঙ্কায় মুশফিক ইচ্ছাকৃতভাবে হাত দিয়ে ধরেন। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা এতে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড ‘ আউটের আবেদন করেন। তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লে দেখে কিউইদের আবেদনে সাড়া দেন। ৮৩ বলে ৩৫ রানে শেষ হয় মুশফিকের ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে ১৫৪ বলে ৫৭ রানের জুটি।
মুশফিকের বিদায়ের পর আরেক ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দিপু বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। দলীয় ১২৩ রানের মাথায় গ্লেন ফিলিপসের বলে টম ব্লান্ডেলের হাতে ধরা পড়েন দিপু। ১০২ বলে ৩১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর লেজের সারির ব্যাটাররা চেষ্টা করেও বেশিদূর যেতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) : ৬৬. ২ ওভারে ১৭২/১০। (জয় ১৪, জাকির ৮, শান্ত ৯, মমিনুল ৫, মুশফিক ৩৫, দিপু ৩১, মিরাজ ২০, সোহান ৭, নাঈম ১৩* , তাইজুল ৬, শরিফুল ১০; সাউদি ৫.২-৫-০-১, জেমিসন ৪-২-৮-০, প্যাটেল ১৭-৭-৫৪-২, স্যান্টনার ২৬-৭-৫৬-৩, ফিলিপস ১২-১-৩১-৩)।
নিউজিল্যান্ড (প্রথম ইনিংস) : ১২.৪ ওভারে ৫৫/৫*। (লাথাম ৪, কনওয়ে ১১, উইলিয়ামসন ১৩, নিকোলস ১, মিচেল ১২*, টম ০, ফিলিপস ৫*; শরিফুল ১-১-০-০, মিরাজ ৬-১-১৭-৩, তাইজুল ৫.৪-০-২৯-২)।