শেষ হওয়ার আগেই পরিত্যক্ত ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন
অবশেষে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের সংগ্রহ যখন দুই উইকেটে ৩৮ রান, তখন আলোকস্বল্পতায় সাময়িক বন্ধ রাখা হয় খেলা। এরপর চলে অপেক্ষা। দেড় ঘণ্টায়ও খেলার অনুকূল পরিবেশ না পেয়ে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ার। যদিও এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহের চেয়ে ৩০ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
টেস্টের তৃতীয় দিনে আজ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) খেলা হয়েছে ৩২.৩ ওভার। সকালে হালকা বৃষ্টি ও বিকেলের আলোকস্বল্পতার মাঝেই চলছিল খেলা। ৫৫ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে আজ দিন শুরু করা কিউইরা ব্যাট করে ২৪.৩ ওভার। শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়ে দলটি স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১২৫ রান। সবমিলিয়ে ৩৭.১ ওভারে অলআউট হয় ১৮০ রানে।
ঢাকা টেস্ট যেন পণ করেছে বাধার মুখে পড়ার। টেস্টের প্রথম দিন নির্ধারিত সময়ের আগে খেলা শেষ হয়। কারণ ছিল আলোকস্বল্পতা। দ্বিতীয় দিন পুরোটাই ভেসে যায় বৃষ্টিতে। মাঠে গড়ায়নি একটি বলও। আজ তৃতীয় দিন খেলা শুরু হয় আড়াই ঘণ্টা পর। ৫৫ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করা নিউজিল্যান্ডকে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে অলআউট করে ১৮০ রানে।
আট রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে স্বাগতিকরা প্রথম ওভারেই হারায় ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট। তিন রানের সময় এজাজ প্যাটেলের বলে প্রথম স্লিপে ডেরিল মিচেলের ক্যাচে পরিণত হন জয়। সাজঘরে ফেরেন দুই রান করে। দ্বিতীয় উইকেটে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জাকির হাসান ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ৩৮ রানে টিম সাউদির বলে আউট হন শান্ত। ১৫ রান করে কেইন উইলিয়ামসনের তালুবন্দি হন তিনি।
শান্ত আউট হওয়ার পর বন্ধ হয় ম্যাচ। কারণ, আবারও আলোকস্বল্পতা। শেষ পর্যন্ত দিনের বাকি খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ক্রিজে আছেন জাকির ও মমিনুল হক।
এর আগে তৃতীয় দিনে বাংলাদেশি বোলারদের লক্ষ্যটা ছিল ৫৫ রানে পাঁচ উইকেট হারানো কিউইদের যত দ্রুত সম্ভব অলআউট করা। ক্রিজে থাকা ডেরিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপসের জুটি মাথাব্যথার কারণ ছিল বাংলাদেশের জন্য।
মিচেলকে আউট করে ঝুঁকি কমান নাঈম হাসান। ১৮ রান করা মিচেলের লং শট মিড অফে অনেকটা পথ দৌড়ে এসে তালুবন্দি করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটও শিকার করেন নাঈম। মিচেল স্যান্টনারকে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান। অষ্টম উইকেট জুটিতে কাইল জেমিসনকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন ফিলিপস। দ্রুত গতিতে রান তোলেন তিনি। ৫৫ রানের সেই জুটি ভাঙেন পেসার শরিফুল ইসলাম। শাহাদাত হোসেন দিপুর হাতে ক্যাচ হয়ে ফেরেন ২০ রান করা জেমিসন।
একপ্রান্ত আগলে রেখে ৭২ বলে ৮৭ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেন ফিলিপস। তার ব্যাটেই বড় লিডের আশা করছিল সফরকারীরা। ৯টি চার ও চার ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি থামান শরিফুল। উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তাকে। শেষ ব্যাটার হিসেবে টিম সাউদির উইকেট তুলে নেন তাইজুল ইসলাম। কিউইরা থামে ১৮০ রানে।
বাংলাদেশের পক্ষে তাইজুল ও মিরাজ নেন তিনটি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট পান শরিফুল ও নাঈম।
এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থামে ১৭২ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৬৬.২ ওভারে ১৭২/১০।
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৩৭.১ ওভারে ১৮০/১০। (লাথাম ৪, কনওয়ে ১১, উইলিয়ামসন ১৩, নিকোলস ১, মিচেল ১৮, টম ০, ফিলিপস ৮৭, স্যান্টনার ১, জেমিসন ২০, সাউদি ১৪, প্যাটেল ০*; শরিফুল ৪-১-১৫-২, মিরাজ ১১-১-৫৩-৩, তাইজুল ১৬.১-০-৬৪-৩, নাঈম ৪-০-২১-২, মমিনুল ২-০-১৭-০)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৮ ওভারে ৩৮/২*। (জয় ২, জাকির ১৬*, শান্ত ১৫, মমিনুল ০*; প্যাটেল ৪-০-১৩-১, স্যান্টনার ২-০-১২-০, সাউদি ২-০-৮-১)