আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ের এক বছর
একটি শিরোপার জন্য আর্জেন্টিনার অপেক্ষা বহু বছরের। লিওনেল মেসির অপেক্ষাটা আরও বড়। এক জীবনে ফুটবল ক্যারিয়ারের যা জেতার সব জিতেও একটি সোনালি ট্রফির জন্য ক্যারিয়ারজুড়ে অপূর্ণতা ভর করেছিল তার। মরুর বুকে ধুয়ে-মুছে গেল সব অপূর্ণতা। শেষ হলো আর্জেন্টিনার দীর্ঘ অপেক্ষা। লিওনেল মেসির যুগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা।
ঠিক এক বছর আগের আজকের এই দিনটি ভুলতে পারবে না আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটে ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ এ। রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনাল দেখেছে সেদিন বিশ্ব। কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ নিজেদের করে নেয় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে দুদল ছিল ৩-৩ গোলের সমতায়।
’আর সেই ঘরের মধ্যে হাসির উল্লাস
ঝনঝন শব্দ করছে স্বর্গীয় ঘণ্টার মতো
ঝলসে উঠছে কয়েকটি সূক্ষ্ম অগ্নিস্ফুলিঙ্গ!’
ফরাসি কবি পল ভ্যার্লেনের কবিতার এই গুচ্ছ পঙক্তিমালা বোধহয় সেই রাতের জন্যই লেখা হয়েছিল! তিনি কি জানতেন, কবিতা ফিরে আসবে তার মাতৃভূমির বিরুদ্ধে? জানলেও বোধহয় রাগ করতেন না। যে শিরোপার জন্য এত অপেক্ষা, কবিতার মতোই রোমাঞ্চকর ফুটবল উপহার দিয়ে অপেক্ষার চৌকাঠ মাড়ালো আর্জেন্টিনা। অবসান ঘটলো তিন যুগের।
সেই ম্যাচের পর বদলে গেছে আর্জেন্টাইন ফুটবলের চিত্র। দাপটের সঙ্গে গত এক বছর ধরে খেলছে দুর্বার ফুটবল। বুক থেকে পাথর সরে গেলে যেমন হালকা হয় নিঃশ্বাস, আর্জেন্টিনার বেলাতেও হয়েছে সেটিই। মেসি-ডি মারিয়ারা এখন ফুটবল খেলেন আনন্দের সঙ্গে। হারানোর কিছু নেই। যা চেয়েছেন, তারা তা পেয়েছেন। এখন সময় শুধুই এগিয়ে চলার। ভক্তদের ভালোবাসা নিয়ে বেশ ভালোভাবেই আগামীর পথে ছুটছে আর্জেন্টিনা। এক বছর পুরোনো, তবু মনে হয় খানিক আগের তরতাজা স্মৃতি। যা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে এখনও উল্লাসের ঘোরে মেতে আছেন আকাশী-নীল ভক্তরা।