সৌম্যর ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে বাংলাদেশের বড় পুঁজি
সবশেষ ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। এরপর অফফর্ম, দল থেকে বাদ পড়া, আবার ফেরা…কত কিছু হয়েছে তার জীবনে। তবে এক ইনিংসেই সব সমালোচনার জবাব দিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। কিউইদের বিপক্ষে হাঁকিয়েছেন দারুণ এক শতক। সৌম্যর এমন ইনিংসে ভর করে নিউজিল্যান্ডকে ২৯২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নেলসনে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৯.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৯১ রান তোলে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ১৬৯ রান করেন সৌম্য সরকার।
নেলসনে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে ভালো করলেও এই ম্যাচে ইনিংস বড় করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। নিউজিল্যান্ডের পেসারদের দারুণ সুইং বোলিংয়ে শুরুতে আত্মসমর্পণ করেন আলগা শটে। দলীয় ১১ রানের মাথায় অ্যাডাম মিলনের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন বিজয়। ১২ বল খেলে দুই রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
বিজয়ের বিদায়ের পর সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করছিলেন। বাউন্ডারিতে রান পাচ্ছিলেন। কিন্তু হুট করেই পথ হারায় বাংলাদেশ। একটি নয়, বাংলাদেশ উইকেট হারায় দুটি। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় ডাফির লেন্থ বলে ফ্লিক খেলতে চেয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু বল খানিকটা বেশি লাফ দেওয়ায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পুরোপুরি শট খেলতে পারেননি। বল তার ব্যাটের ছোঁয়া পেয়ে কভারে নিকোলসের হাতে জমা পড়ে। ৯ বল ছয় রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপর পেসার উইল ও’রউকে দারুণ পুল শটে বাউন্ডারির খাতা খোলা লিটন পরের বলে কভারে ক্যাচ দেন। ১১ বলে ছয় রানে থেমে যায় লিটনের ইনিংস। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে সৌম্য ও তাওহিদ হৃদয়ের ৩৬ রানের জুটি আশা দেখাচ্ছিল। কিন্তু রান আউটে ভাঙল তাদের জুটি। ১৬ বলে ১২ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন হৃদয়।
হৃদয়ের বিদায়ের পর দলের হাল ধরে মুশফিক-সৌম্য জুটি। এই জুটিতে আসে আরও ৯১ বলে ১০৮ রান। দলীয় ১৭৬ রানে ডাফির লেন্থ বল খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশফিক। ৫৭ বলে পাঁচ বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করে মুশফিক ফেরেন সাজঘরে।
তারপর মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ১১৬ বলে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি পান সৌম্য সরকার। প্রবল সমালোচনা এবং আজকের ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় সৌম্যর সেঞ্চুরি অনন্য এক ইনিংস। শেষমেশ মিডল অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে বাকি কাজটা সারেন সৌম্য। সুযোগ ছিল লিটনকে টপকে ওডিআইতে বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে পৌঁছানোর। তবে দলীয় ২৯০ রানে ১৫১ বলে ১৬৯ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে আউট হন সৌম্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৪৯.৫ ওভারে ২৯১/১০ (সৌম্য ১৬৯, বিজয় ২, শান্ত ৬, লিটন ৬, হৃদয় ১২, মুশফিক ৪৫, মিরাজ ১৯, তানজিম সাকিব ১৩, রিশাদ ৬, শরিফুল ১, হাসান ০; মিলনে ১০-০-৭৪-১, ডাফি ১০-০-৫১-৩, উইলিয়াম ৯.৫-০-৪৭-৩, জশ ৬-০-৩০-১, অশোক ১০-১-৬৩-১, রাচিন ৪-০-১৯-০)