নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়া জয়
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ২০০৭ সাল থেকে ওয়ানডে খেললেও কখনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহদের মতো ঝানু ক্রিকেটার নিয়েও হারের বৃত্ত ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে সেই ইতিহাস বদলাল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে জিতল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নেপিয়ারে ম্যাকলিন পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শরিফুল-সৌম্যদের বোলিং তোপে ৩১.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৯৮ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। জবাবে বিজয়-শান্তদের ব্যাটে ১৫.১ ওভারে ৯ উইকেটের জয় তুলে নেয় সফরকারীরা।
দারুণ বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ৯৮ রানে অলআউট করার পর দায়িত্বটা ছিল ব্যাটারদের। সেই কাজে পুরোপুরি সফল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে সাবধানী শুরু করে বাংলাদেশ। তবে, পঞ্চম ওভারের শেষ দিকে মাঠ ছেড়ে উঠে যান সৌম্য। চোখে কিছু একটা হওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। নিরাপদ থাকতে তাই মাঠ থেকে বেরিয়ে যান।
এরপর বিজয়কে নিয়ে দারুণ জুটি গড়েন অধিনায়ক শান্ত। এই দুজনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে জয়ের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। যদিও দলীয় ৮৪ রানের মাথায় উইলিয়ামের বলে ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিজয়। আউটের আগে করেন ৩৩ বলে ৩৭ রান। এরপর লিটনকে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন শান্ত।
এর আগে, টস জিতে যে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ভুল সিদ্ধান্ত নেননি, বল হাতে সেটাই প্রমাণ করলেন শরিফুল-সাকিবরা। কিউইদের বিপর্যয়ের শুরুটা দলীয় ১৬ রানে ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে হারিয়ে। তানজিম হাসান সাকিবের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে করেন ১২ বলে আট রান।
শুরুর চাপ অবশ্য সামাল দিতে পারেনি কিউইরা। দলীয় ২২ রানে হারায় দ্বিতীয় উইকেট। সাকিবের বলে মিড অনে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন হেনরি নিকোলস। ১২ বল খেলে মাত্র এক রান করেন এই ব্যাটার। দ্রুত দুই উইকেট হারালেও লাথাম-ইয়াং জুটিতে চাপ সামাল দেয় কিউইরা।
এই দুই ব্যাটারের ব্যাটে ভালোই এগোচ্ছিল স্বাগতিকরা। তবে, তাদের জুটি বড় হতে দেননি শরিফুল। দলীয় ৫৮ রানের মাথায় লাথামের বিদায়ে ভাঙে ৩৬ রানের জুটি। শরিফুলের ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন লাথাম। ৩৪ বলে ২১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর মাত্র পাঁচ রানের ব্যবধানে আরও দুই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এবারও শরিফুলের আঘাত। উইল-চাপম্যানের বিদায়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। ৪৩ বলে ২৬ রান আসে ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে। এরপর, সৌম্য সরকারের দারুণ বোলিংয়ে লড়াই করতে পারেননি লেজের সারির ব্যাটাররা। শেষমেশ ৯৮ রানে থামে স্বাগতিকরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ৩১.৪ ওভারে ৯৮/১০ (ইয়াং ২৬, রাচিন ৮, নিকোলস ১, লাথাম ২১, ব্লান্ডেল ৪, চাপম্যান ২, ক্লার্কসন ১৬, মিলনে ৪, অশোক ১০, ডাফি ১, উইলিয়াম ১; শরিফুল ৭-০-২২-৩, সাকিব ৭-২-১৪-৩,মুস্তাফিজ ৭.৪-০-৩৬-১, সৌম্য ৬-১-১৮-৩, মিরাজ ১-০-৩-০, রিশাদ ৩-০-৪-০)
বাংলাদেশ : ১৫.১ ওভারে ৯৯/১ (সৌম্য ৪ (রিটায়ার্ড হার্ট), বিজয় ৩৭, শান্ত ৫১* , লিটন ১* ;মিলনে ৪-০-১৮-০, ডাফি ৫-০-২৭-০, ক্লার্কসন ২-০-১৯-০, উইলিয়াম ৪-০-৩৩-১, অশোক ০.১-০-২-০)
ফলাফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ : নিউজিল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।