কুমিল্লাকে উড়িয়ে প্লে-অফে তামিমের বরিশাল
প্লে-অফের তিনটি জায়গা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। বাকি একটি জায়গার জন্য ফরচুন বরিশালের সঙ্গে যদি-কিন্তুর সমীকরণে কিছুটা লড়াইয়ে ছিল খুলনা টাইগার্স। বিজয়দের মাঠে নামার আগে সেই লড়াইটুকু থামিয়ে জায়গাটা নিজেদের করে নিল বরিশাল। শক্তিশালী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিল তামিম ইকবালের দল।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জিতলেই সুপার ফোর। হারলে যদি-কিন্তুর প্রশ্ন! এমন সমীকরণের ম্যাচে কোনো প্রশ্নের সুযোগই রাখল না বরিশাল। কুমিল্লাকে ছয় উইকেটে হারিয়ে নিশ্চিন্তে প্লে-অফের টিকিট কাটল তামিমের দল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বল হাতে আগেই নিজেদের কাজটা সহজ করে রেখেছিল বরিশাল। তাইজুল-ম্যাকয়দের দুর্দান্ত বোলিংয়ে কুমিল্লাকে থামিয়ে দিয়েছিল দেড়শর নিচে। যা তাড়া করতে নেমে শুরুটা নড়বড়ে হলেও পা হড়কায়নি বরিশাল। রান তাড়ায় শুরুতে আহমেদ শেহজাদের বিদায়ে কিছুটা চাপে পরে দলটি। সেই চাপ সামলে দলকে লড়াইয়ে রাখেন অধিনায়ক তামিম। ওয়ানডাউনে নামা কাইল মায়ার্সকে নিয়ে জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন। ২৫ রান করে মায়ার্স ফিরে গেলে তামিমের সঙ্গী হন মুশফিক।
দুই অভিজ্ঞ তারকা মিলে বরিশালকে নিয়ে যান জয়ের দুয়ারে। মাঝপথে ফোর্ডকে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। তার ব্যাটে চড়েই জয়ের পথ সোজা করে ফেলে বরিশাল। দলকে জেতানোর পথে শেষ পর্যন্ত তামিম উপহার দেন ৬৬ রানের ইনিংস। ৪৮ বলে যা সাজানো তিনটি ছক্কা ও ছয়টি চারে। তার সঙ্গে থাকা মুশফিক খেলেন ২৪ বলে ১৭ রানের ইনিংস। শেষ দিকে নেমে সৌম্য করেন ৬ রান। আর মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। দুই বল হাতে রেখে ১৪১ রান করে জয় তুলে নেয় বরিশাল।
এর আগে ম্যাচটিতে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১৪০ রান তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান এসেছে জাকের আলির ব্যাট থেকে।
আজ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) শেষ হতে যাচ্ছে বিপিএলের গ্রুপ পর্ব। বরিশালের জয়ের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হলো প্লে-অফের চারটি জায়গাই। দলগুলো হলো-রংপুর রাইডার্স, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ফরচুন বরিশাল ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
এ ম্যাচে বোলিংয়ের শুরুটাও নিয়ন্ত্রিতই করে বরিশাল। ওপেন করতে নামা সুনিল নারিনকে টিকতে দেননি বেশিক্ষণ। কুমিল্লার দলীয় ২৪ রানে বিদায় করেন নারিনকে। সৌম্যের হাতেক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে নারিনের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। এরপর লিটন দাসকেও থিতু হয়ে দেয়নি বরিশাল। সপ্তম ওভারে এসে কুমিল্লার অধিনায়ককে বোল্ড করেন তাইজুল ইসলাম। দুই বাউন্ডারিতে ১২ বলে ১২ রান যোগ করে ফেরেন লিটন। এরপর চারে নামা মাইদুল ইসলাম অঙ্কনকেও নিজের শিকার বানান তাইজুল। মাত্র ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় কুমিল্লা।
মঈন আলি ও তাওহিদ মিলে সেই বিপদ কাটাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু থিতু হয়ে আগ্রাসী হওয়ার আগেই এই জুটি ভাঙেন ম্যাকয়। ২৫ রান করা তাওহিদকে জাবেদের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ম্যাকয়। দ্রুত উইকেট হারানোর পাশাপাশি কমতে থাকে কুমিল্লার রানের গতি। এই রান বাড়াতে বড় আস্থার নাম ছিলেন দুই বিদেশি তারকা মঈন ও আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু, আশার আলো হয়ে জ্বলার আগেই এই জুটি ভাঙেন জাবেদ। মঈনকে নিজের শিকার বানিয়ে ১০ রানের বেশি জুটি বড় হতে দেননি তিনি। ২২ বলে ২৩ রান করে ফেরেন ইংলিশ তারকা।
পরের শিকারটি তাইজুলের। তার দ্বিতীয় স্পেলে এসে ভাঙেন আন্দ্রে রাসেলের স্টাম্প। বোল্ড হওয়ার আগে ১১ বলে ১৪ রান করেন কুমিল্লার এই বিদেশি তারকা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর মিছিলে বেশিদূর যেতে পারেনি কুমিল্লা। বরিশালের দাপুটে বোলিংয়ের সামনে থমকে যায় মাত্র ১৪০ রানে। শেষ দিকে জাকের আলি নেমে কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন।
দিনের অন্য ম্যাচে আজ মুখোমুখি হবে খুলনা টাইগার্স। প্রতিপক্ষ সিলেট স্ট্রাইকার্স। যাদের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে আগেই। শেষ ম্যাচটি তাদের শুধুই নিয়মরক্ষার। এখন খুলনার জন্যও নিয়মরক্ষার। কারণ মাঠে নামার আগেই শেষ চার নিয়ে তাদের যে টুকু আশা ছিল সেটাও শেষ করে দিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে বরিশাল।