হায়দরাবাদকে পাত্তা না দিয়ে ফাইনালে কলকাতা
চলতি আসরে দুদলের প্রথম ম্যাচটা ছিল টানটানা উত্তেজনায় ঠাসা। দুই ইনিংসেই ২০০ এর বেশি রান দেখা ম্যাচে শেষ হাসি হাসে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ব্যতিক্রম হয়নি আজ মঙ্গলবারও (২১ মে)। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচটি অবশ্য হয়েছে একপেশে। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হায়দরাবাদকে পাত্তাই দিল না কলকাতা। দুরন্ত বোলিংয়ের পর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে হায়দরাবাদকে হেসেখেলে হারিয়েছে দলটি।
হায়দরাবাদকে আট উইকেটে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে কলকাতা নিশ্চিত করেছে আইপিএল ২০২৪ এর ফাইনাল। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে হায়দরাবাদ তোলে ১৫৯ রান। জবাবে মাত্র ১৩.৪ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান করে কলকাতা। পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।
এবারের আসর বিবেচনায় ১৬০ রানের লক্ষ্য খুব একটা বড় না। সেটি তাড়ায় শুরু থেকেই আগ্রাসী কলকাতা। ওপেনিং জুটিতে রহমতউল্লাহ গুরবাজ ও সুনিল নারিন মিলে ২০ বলে তোলেন ৪৪ রান। ১৪ বলে ২৩ রান করে নটরাজের বলে বিজয়কান্তের ক্যাচে পরিণত হন গুরবাজ। প্যাট কামিন্সের বলে বিজয়ের হাতেই ধরা পড়েন নারিন। তার ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ২১ রান। দুই ওপেনার বিদায় নিলেও কলকাতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যর্থ হায়দরাবাদ।
অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার মিলে রানের গতি ঠিক রাখেন। ৬৭ রানে নারিন ফিরে যাওয়ার পর দুজন মিলে মাত্র ১০ ওভারে কলকাতাকে শতরান পার করান। হায়দরাবাদের বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়ে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছোটাতে থাকেন দুই আইয়ার। ২৮ বলে অর্ধশতক তুলে নেন ভেঙ্কটেশ। পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কায় ২৮ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। পিছিয়ে থাকেননি অধিনায়ক শ্রেয়াসও, ঝড় তোলেন রীতিমতো। ২৪ বলে পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫৮ রান।
এর আগে পুরো আসরে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা হায়দরাবাদ আজ যেন ব্যাট করতেই ভুলে গেছে। ট্রাভিস হেডকে ইনিংসের মাত্র দ্বিতীয় বলেই বোল্ড করেন মিচেল স্টার্ক। কোনো রান না করেই স্বদেশীর বলে সাজঘরে ফেরেন হেড। গোটা আসরে আহামরি না খেলা স্টার্ক জ্বলে উঠলেন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। হায়দরাবাদের আরেক পাওয়ার হিটার ওপেনার অভিষেক শর্মাকে ফেরান ভৈভব অরোরা। চার বলে তিন রান করে আন্দ্রে রাসেলের তালুবন্দি হন অভিষেক। ১৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ধাক্কা খায় হায়দরাবাদ।
রাহুল ত্রিপাঠি ও নিতিশ কুমার যেই না ইনিংস মেরামতে নজর দিচ্ছিলেন, ফের আঘাত হানেন স্টার্ক। ৯ রান করা নিতিশকে উইকেটের পেছনে রহমতউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ বানান। স্টার্ক পরের বলে বোল্ড করেন শাহবাজ আহমেদকে। রানের খাতা খোলার আগেই মিডল স্ট্যাম্প উড়ে যায় শাহবাজের। ৩৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারাতেই পড়ে যায় হায়দরাবাদ।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে হায়দরাবাদকে পথ দেখান হেনরিখ ক্লাসেন ও ত্রিপাঠি। আসরজুড়ে দুর্দান্ত খেলা দুজন কলকাতার বিপক্ষে কাউন্টার অ্যাটাকে যায়। দ্রুতগতিতে রান তোলেন দুজনই। এই জুটি পার করান দলীয় ১০০ রান। ২১ বলে ৩২ করে বিধ্বংসী হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ক্লাসেন। তাকে বিদায় করেন বরুণ চক্রবর্তী। রিঙ্কু সিংয়ের ক্যাচে পরিণত করেন ক্লাসেনকে। ৩৫ বলে ৫৫ রান করে রানআউটের শিকার হন ত্রিপাঠি। সঙ্গে থামে হায়দরাবাদের বড় ইনিংস খেলার স্বপ্ন। শেষ দিকে একা লড়াই করেছেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তার ২৪ বলে ৩০ রানে দেড়শ পার করে দলটি।
কলকাতার পক্ষে ৩৪ রানে তিন উইকেট নেন স্টার্ক। ২৬ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট পান বরুণ।