রাজস্থানকে উড়িয়ে আইপিএলের ফাইনালে হায়দরাবাদ
প্রথম কোয়ালিফায়ারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সামনে পেরে ওঠেনি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকায় সুযোগ মেলে আরেকটি কোয়ালিফায়ার খেলার। এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেনি অরেঞ্জ আর্মিরা। রাজস্থান রয়্যালসকে সহজে হারিয়ে চলতি আইপিএলের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে প্যাট কামিন্সের হায়দরাবাদ।
শুক্রবার (২৪ মে) আইপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রাজস্থানকে ৩৬ রানে হারিয়েছে হায়দরাবাদ। এই জয়ে ফাইনালে আবারও কলকাতার সঙ্গী প্যাট কামিন্সরা। চেন্নাইতে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণী ম্যাচ মাঠে গড়বে রোববার।
চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা হায়দরাবাদ ২০ ওভারে ৯ উইকেটে তোলে ১৭৫ রান। জবাবে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে রাজস্থান করে ১৩৯ রান।
জয়ের জন্য রাজস্থানের সামনে লক্ষ্যটা বিশাল কিছু ছিল না। অথচ, সেটি তাড়া করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে দলটি। শুরু থেকেই তাদের চেপে ধরে হায়দরাবাদের বোলাররা। ১৬ বলে ১০ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে রাহুল ত্রিপাঠির ক্যাচ হয়ে বিদায় নেন ওপেনার টম ক্যাডমোর। অপর ওপেনার যশস্বী জাইসওয়াল ছিলেন বিধ্বংসী। রাজস্থান যতটুকু এগিয়েছে, তার কল্যাণেই। ২১ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৪২ রান করেন জাইসওয়াল। তার ঝড়ো ইনিংসটি থামান শাহবাজ আহমেদ্ আবদুর সামাদের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন জাইসওয়াল।
রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ব্যর্থ হন নিজেকে মেলে ধরতে। ১১ বলে ১০ রান করে পরিণত হন অভিষেক শর্মার শিকারে। রাজস্থানের বড় ভরসা রিয়ান পরাগকে যেন খুঁজেই পাওয়া যায়নি ক্রিজে। ১০ বলে ছয় রান করে শাহবাজের বলে অভিষেকের তালুবন্দি হন। ব্যাট করতে ভুলে যান শিমরন হেটমায়ারও। ১০ বলে মাত্র চার রান করতে পেরেছেন অভিষেকের বলে বোল্ড হওয়ার আগে। ৯২ রানে ছয় উইকেট হারানো রাজস্থান ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয় হায়দরাবাদের হাতে।
নিঃসঙ্গ শেরপার মতো একা চেষ্টা করে গেছেন ধ্রুব জুরেল। সমানে ব্যাট চালিয়েছেন। ব্যবধান কমানোর লক্ষ্যে বাড়িয়েছেন রানের গতি। কিন্তু তার একার লড়াই জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। জয় দূরে কাছাকাছিও যেতে পারেনি রাজস্থান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন জুরেল। তবে সেটা স্রেফ হারের ব্যবধানই কমিয়েছে স্রেফ।
হায়দরাবাদের পক্ষে চার ওভারে ২৩ রানে তিন উইকেট শিকার করেন শাহবাজ। চার ওভারে ২৪ রান খরচায় দুই উইকেট পান অভিষেক।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন অভিষেক শর্মা। হায়দরাবাদ ওপেনারের ঝড় অবশ্য স্থায়ী হয় এক ওভার। পাঁচ বলে ১২ রান করে বিদায় নেন ট্রেন্ট বোল্টের বলে। ক্যাচ নেন টম ক্যাডমোর। কলকাতার বিপক্ষে পুরোদস্তুর ব্যর্থ ট্রাভিস হেড এদিন রান পেয়েছেন। তবে, সেটি ঠিক হেডসুলভ নয়। ৩৪ রান করতে খেলেন ২৮ বল। সন্দ্বীপ শর্মার বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন অসি তারকা হেড।
ওয়ানডাউনে নামা রাহুল ত্রিপাঠি আভাস দিয়েছিলেন টর্নেডোর। ১৫ বলে পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ভয়ানক হয়ে ওঠা ত্রিপাঠিকে আউট করেন বোল্ট, ক্যাচ নেন যুজবেন্দ্র চাহাল। এইডেন মার্করামের ওপর ভরসা ছিল হায়দরাবাদের। সেটি পূরণে ব্যর্থ তিনি। একই ওভারে ত্রিপাঠির পর মার্করামকেও ফেরান বোল্ট, ক্যাচ যথারীতি চাহালের হাতে। মাত্র এক রান করে দলকে বিপদে ফেলে ফিরে যান মার্করাম।
আবদুল সামাদ ও নিতিশ কুমারের ব্যাট হাসেনি দলের প্রয়োজনে। আভেশ খানের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে বোল্ড হন সামাদ, ১০ বলে পাঁচ করে আভেশেরই শিকার হন নিতিশ। ১৪ ওভারে ১২০ রান তুললেও চয় উইকেট হারিয়ে খানিক ব্যাকফুটে যায় হায়দরাবাদ।
সেখান থেকে দলের ত্রাণকর্তা হন হেনরিখ ক্লাসেন। ৩৩ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। ফিফটি করার পথে কোনো চার মারেননি তিনি, ছক্কা হাঁকান চারটি। তবে, ক্লাসেনকে সেখানেই থামান সন্দ্বীপ। বোল্ড হয়ে ৩৪ বলে ৫০ রান করে আউট হন হায়দরাবাদের অন্যতম ভরসা। শাহবাজ আহমেদের ব্যাটে শেষ দিকে মোটামুটি সংগ্রহ দাঁড় করায় হায়দরাবাদ। শাহবাজ করেন ১৮ বলে ১৮ রান।
রাজস্থানের পক্ষে বোল্ট ও আভেশ তিনটি করে এবং সন্দ্বীপ দুই উইকেট পান।