‘বিশ্বকাপ দিয়ে মার্কিনিরা ক্রিকেটকে আপন করে নেবে’
বেসবল-বাস্কেটবলের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনিদের ফুটবল প্রেমের কথাও অজানা নয়। ক্লাব ফুটবলের আমেজ তো ছিলই, ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসি দেশটিতে পা রেখে এই প্রেম বাড়িয়েছেন আরও বহুগুণ। তবে, এতকিছুর মাঝে দেশটিতে ক্রিকেটের জায়গা ঠিক কতটুকু? সবুজ গালিচায় ব্যাটে-বলের ঝঙ্কার তাদের হৃদয়ে আদো দোলা দেয়?
এই প্রশ্নের উত্তর মেলাবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সারা বিশ্বের কোটি হৃদয়ে ক্রিকেট প্রেম জাগিয়ে তুলতে আয়োজক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে পছন্দের দেশ কে বা হতে পারতো! যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আয়োজিত এই বিশ্বকাপ ব্যাপ্তিতে ছাড়িয়েছে আগের আট আসরকে। ৫৫ ম্যাচের এই বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ২০টি দেশ। দুই দেশের ৯টি শহরে উঠেছে টি-টোয়েন্টির ঝড়!
যেই ঝড় আনন্দের, উৎসবের, ক্রিকেটে মেতে থাকার। আর এই উৎসবের মধ্যে দিয়েই ক্রিকেটকে আপন মার্কিনিরা আবারও আপন করে নেবে বলে বিশ্বাস বাংলাদেশি ভক্তদের। বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচ চলাকালীন মাঠে উপস্থিত থাকা এক প্রবাসী বাঙালি শুক্লা রায়ের ব্যাখ্যাটা ছিল এমন, ‘নিউইয়র্কে বাংলাদেশ বনাম ভারতের এই প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে প্রচুর মার্কিনিরা এসেছে। এটা ভেবে দারুণ লাগছে যে, মার্কিনিরা ক্রিকেট বুঝতে শুরু করেছে। অনেকে ব্যক্তিগতভাবে ক্রিকেট নিয়ে প্রশ্ন করছেন, ক্রিকেট নিয়ে জানতে চাইছেন। আশাকরি এই বিশ্বকাপ দিয়ে মার্কিনিরা ক্রিকেটকে আপন করে নেবে। তারাও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো উঁচু পর্যায়ের ক্রিকেট খেলবে।’
অবশ্য উঁচু পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার পথে স্বাগতিকরা যে এগুবে তার আঁচ পাওয়া গেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। তিন ম্যাচের সিরিজে টানা দুটিতে বাংলাদেশকে দাঁড়াতেই দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলের বিপক্ষে আনকোরা যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।
তাতে স্বাগতিকদের আমেজ যে কিছুটা হলেও বেড়েছে সেটা বোঝা যায়। সেখানে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও নাট্য অভিনেতা শেখ তানভীর আহমেদও যেটা টের পেয়েছেন স্টেডিয়ামে গিয়ে।
বাংলাদেশ বনাম ভারতের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে গিয়ে এনটিভি অনলাইনকে তানভীর নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপ। এটা আসলে আমাদের কাছে একটা অন্যরকম আমেজ। তবে, ওদের কাছেও যে এতটা হবে সেটা আজকের আগে টের পাইনি। আজকে যখন স্টেডিয়ামে আসি তখন গাড়ি পার্ক করে আইসিসির শাটল বাসে করে মূল ভেন্যুতে আসি। স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেই আমরা নিজেরাই চমকে গেলাম। একটি প্রস্তুতি ম্যাচে, একটা অস্থায়ী স্টেডিয়ামে এত উত্তেজনা, এত মানুষ এটা আসলে না এলে বুঝতে পারতাম না।’
বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচ বলেই এই উত্তাপ বেশি বলে মনে করছেন এই নাট্য অভিনেতা,‘বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ বলেই এই উত্তাপ আরও বেশি ছুঁয়েছে। প্রচুর ইন্ডিয়ানরা এসেছেন ম্যাচ দেখতে। বাংলাদেশিরাও এসেছে। এখানে বেশ জমজমাট অবস্থা।’
সেই সঙ্গে বাংলাদেশকেও শুভকামনা জানাতে ভুললেন না এই শিক্ষার্থী। প্রচলিত এক বাণী শুনিয়ে বললেন, ‘বাংলাদেশ দল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দুই ম্যাচ হারার পর অনেক কথা হয়েছিল। কিন্তু দিন শেষে ঠিকই আমরা বাংলাদেশের ম্যাচ ছুটে এসেছি। আমরা আসলে বাংলাদেশ যেমনই করুক, আমরা সবসময়ে হৃদয়ে ধারণ করি যে—হারলেও বাংলাদেশ, জিতলেও বাংলাদেশ।’
রাফায়াত নামের আরেক দর্শক বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে আসলে আমাদের বরাবরের মতো চাওয়া বাংলাদেশ ভালো করুক। আমরা চাই, অন্তত এই বিশ্বকাপে সুপার এইটে যাক। সুপার এইটে গেলেই আমরা খুশি। আর আজকে ভারতের বিপক্ষে আমরা জিতলেও অনেক খুশি। আর এই ম্যাচ জিতলে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।’