জার্মানির বুকে আজ থেকে বাজবে ইউরোর দামামা
গেল ১৪ দিন ধরে ক্রীড়া প্রেমীদের নজর আটকে আছে মার্কিন মুল্লুকে। টি-টোয়েন্টির মেগা আসরে চার-ছক্কার সাগরে ডুবে আছেন ভক্তরা। এবার অবশ্য মার্কিনিদের ক্রিকেট উৎসবে ভাগ বসাবে ফুটবল। কারণ, আজ থেকেই জার্মানিতে বাজবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের দামামা!
আজ ১৪ই জুন। দিবাগত রাতে মাঠে গড়াবে ইউরোপিয়ান ফুটবলের মেগা আসর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। ৫১ ম্যাচের এই টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে আগামী ১৪ জুলাই। টানা এক মাস ধরে ইউরোপিয়ান ফুটবলের মোহতে ডুবে থাকবেন বিশ্বের হাজারও ভক্তরা।
আসরের প্রথম দিনই গড়াবে জার্মানি বনাম স্কটল্যান্ডের মহারণ। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় বাজবে শুরুর বাঁশি। দুদলের লড়াই শুরুর আগে জেনে ইউরোর নেই খুঁটিনাঁটি।
ইউরোকে পূর্বে পরিচিত ছিল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ নামে। আর এর ট্রফিটির নামকরণ করা হয় ‘অঁরি দুলেনে’র নামে। ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল থাকাকালীন এই ভদ্রলোক ১৯২৭ সালে প্রথম এই টুর্নামেন্টটি করার চিন্তা করেন। তারপর কেটে যায় বহু বছর। তিনি চলে যান পরলোকে। তার মৃত্যুর প্রায় বছর তিনেক পর ১৯৫৮ সালে আলোর মুখ দেখে ইউরো। টুর্নামেন্ট শুরুর বাঁশি বাজে ১৯৬০ সালে।
এর পর একে একে কেটে গেল ৬৩ বছর। প্রথম আসরে অংশ নেয় মাত্র চারটি দল। পরের ২০ বছরে দল সংখ্যা দাঁড়ায় আটটিতে। সময়ের পরিক্রমায় এখন দলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪টিতে। এই সময়ের মাঝে গৌরব-মর্যাদায় ভক্তদের মনে বেশ পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছে এই ইউরিপিয়ান লড়াই। ৫ যুগেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এই টুর্নামেন্টের ১৭তম আসরই বসছে জার্মানিতে। ২৪ দলের আসরে জার্মানিরা খেলবে ‘এ’ গ্রুপের হয়ে। একই গ্রুপে তাদের সঙ্গী স্কটল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং সুইডেন।
ঘরের মাঠে ইউরো শুরু করতে যাওয়া জার্মানিরা এই মঞ্চের রাজা হয়েছে তিনবার। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দীর্ঘ ২৭ বছর আগে। এত বছর অপেক্ষার পর আবারও ইউরোপের সেরা হওয়ার উপলক্ষ্য। সেটা আবার ঘরের মাঠে। সুযোগটা জুলিয়ান নাগেলসম্যানের শিষ্যরা কাজে লাগাতে পারেন কি না সেটাই দেখার অপেক্ষা!
কোচ হিসেবে নাগেলসম্যান কতটা প্রসিদ্ধ সেটা সবার জানা। প্রতিপক্ষ দলের শক্তিমত্তা অনুযায়ী দলকে নানান রকম ফর্মেশনে খেলাতে পারেন। দলের প্রয়োজনে প্রতি ম্যাচেই পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশল ও ফর্মেশন বদলাতে সিদ্ধহস্ত। পজিশন নির্ভর আলট্রা অফেন্সিভ খেলা, কাউন্টার অ্যাটাক ও গেগেনপ্রেসিং করতে তার জুড়ি নেই। তরুণ খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করা এবং ম্যান-ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে তার সুনাম রয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার জার্মানিদের নিয়ে তার বাজিটা যে আড় চোখে দেখার সুযোগ নেই সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তিন যুগ পর ইউরো আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জার্মানি। মাঠের সাফল্যের পাশাপাশি তারা আয়োজন সফল করতে তাদের চেষ্টার কমতি নেই। মাসব্যাপী আসরে প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ফুটবল পর্যটকের আশা করছে তারা। বড় শহরগুলোতে বসানো হয়েছে বিশাল ফ্যান জোন।