গোল পেলেন না মেসি, দুর্দান্ত জয়ে কোপা শুরু আর্জেন্টিনার
প্রীতি ম্যাচ হোক কিংবা প্রতিযোগিতামূলক লড়াই, নিজেদের সেরাটা উজাড় করেই খেলে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। যার ফলে সাফল্য এখনও পর্যন্ত ক্লান্তি হয়ে ঘাড়ে চেপে বসেনি। সেই ক্লান্ত হয়ে না পড়াই লিওনেল স্কালোনি শিষ্যদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আরেকটি কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতার। যার শুরুটা হলো কানাডাকে হারিয়ে।
আজ শুক্রবার (২১ জুন) জর্জিয়ার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করে লিওনেল স্কালোনি শিষ্যরা। বিশেষ করে একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেও জালের দেখা পাননি মেসি। তবে, হুলিয়ান আলভারেজ ও লাউতারো মার্টিনেজের গোলে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তারা।
ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণে আধিপত্য ধরে রাখে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত আলবিসেলেস্তারা। তবে, ডি-বক্সের বাইরে থেকে পারেদেসের দূরপাল্লার শট ঠিক এক হাত ওপর দিয়ে চলে যায়। এরপর অষ্টম মিনিটে আবারও আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। এবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালের দেখা পাননি ডি মারিয়া। তার এমন সহজ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ হতে হয় আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। পরের মিনিটেই আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। তবে, এবারও বার ঘেঁষে চলে যায় বল। যদিও অফসাইডে ছিলেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।
ম্যাচের ১৮তম আরও একবার গোলের সুযোগ পান মেসি। তবে, এবারও মেসির শট ঠেকিয়ে দেয় কানাডার রক্ষণভাগ। ফের হতাশ হতে হয় সমর্থকদের। ২৩তম মিনিটে প্রথমবারের মতো গোলের সুযোগ তৈরি হয় কানাডার। যদিও ফ্রি-কিক থেকে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি দলটি।
২৭তম মিনিটে সম্ভবত সবচেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এই দফায় ফাঁকা বারে আকুনা দুর্দান্ত ক্রস করলেও তা দখলে নেওয়ার মত কেউ ছিল না ডি-বক্সে। ২৯ ও ৩১ মিনিটে দারুন দুটি সুযোগ পেয়েছিল কানাডা। তবে ডেভিসের শট ঠেকিয়ে কোনোমতে দলকে রক্ষা করে আর্জেন্টাইন রক্ষণভাগ।
৩৭তম মিনিটে ডি পল একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে গেলেও কানাডা গোলরক্ষক দারুন দক্ষতায় তাকে আটকে দেন। ৩৮তম মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টারও আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া করেন। এযাত্রায় গোলরক্ষককে এক পেলেও ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি তিনি। ৪২তম মিনিটে ফের আক্রমণে যায় কানাডা। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক মার্টিনেজ দুর্দান্ত সেভে দলকে বাঁচিয়ে দেন। এরপর বাকি সময়ে তেমন কোনো আক্রমণ না হওয়ায় গোলশূণ্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুদল।
প্রথমাধের্র মতো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও আধিপত্য বজায় রাখে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৪৮ তম মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার এগিয়ে গেলেও গোলরক্ষকের বাধায় পড়ে যান। তবে, ফিরতি বলেই গোল করতে ভুল করেননি হুলিয়ান আলভারেজ। যা চলতি কোপাতে তার প্রথম গোল।
৬২তম মিনিটে কানাডাও পেয়েছিল সুযোগ। তবে, এবারও গোলরক্ষক মার্টিনেজের কল্যাণে বেঁচে যায় আর্জেন্টিনা। ৬৫তম মিনিটে আবারও সহজ সুযোগ মিস করেন মেসি। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও রক্ষণের খেলোয়াড়ের গায়ে বল লাগলে হতাশ হতে হয় মেসিকে।
পরের মিনিটেই কর্ণার থেকে সুযোগ পায় কানাডা। তবে ডেভিসের জোরালো হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশ হতে হয় কানাডাকে। ৭৮তম মিনিটে আরও একবার কাউন্টার অ্যাটাক থেকে এগিয়ে যান মেসি। গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল তুলে দিলেও তা বারের পাশ দিয়ে চলে যায়।
মেসির পর একইরকম সুযোগ হাতছাড়া করেন লাউতারো মার্টিনেজ। তিনিও গোলরক্ষককে একা পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। অবশ্য সেই আক্ষেপ মেটাতে সময় লাগেনি মার্টিনেজের। ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে মেসির বাড়ানো বলে ডানপ্রান্ত দিয়ে দারুন ফিনিশিংয়ে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন এই তারকা ফুটবলার।