বাংলাদেশের বিশ্বকাপ—দোয়াতে শুরু, ক্ষমাতে শেষ
দিন যা দিন আসে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হতাশার গল্পগুলো আর ফুরায় না। প্রতিটা বিশ্বকাপের আগে দর্শকদের আশার বুলি শোনালেও শেষমেশ কথা রাখতে পারেন না ক্রিকেটাররা। চিরচেনা সেই হতাশাকে সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয়। এ যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা। আরও একটি বিশ্বকাপ অভিযানে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারের শুরুটা দোয়া দিয়ে আর শেষটা হলো ক্ষমা চেয়ে!
মার্টিন লুথার কিং এর মতে, স্বপ্ন পূরণের জন্য তোমার সবগুলো সিঁড়ি দেখতে পাওয়ার দরকার নেই, শুধু প্রথম সিঁড়িটা দেখতে পেলেই হবে। স্বপ্ন পূরণ তো দূরে থাক, প্রত্যাশা করতেই বারণ করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তাতেই বোঝা যায় কী ধরণের মানসিকতা নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযানে গিয়েছিল বাংলাদেশ!
বিশ্বকাপের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে একটি অনুষ্ঠানে নিজের ও দলের জন্য দেশবাসীর কাছে দেয়া চেয়েছিলেন শান্ত। অধিনায়কের মতো পেসার তাসকিনও দোয়া চেয়ে বিশ্বকাপ অভিযানে যান। দোয়া চেয়ে গেলেও শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হারের লজ্জা পায় চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। প্রস্তুতি ম্যাচেও ভারতের কাছে বড় হারের ধাক্কা। সবমিলিয়ে মূল লড়াইয়ে নামার আগেই বেশ নড়বড়ে হয়ে যায় পুরো দল।
অবশ্য সেই ব্যর্থতা পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কা , নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে জায়গা করে নেয় সুপার এইটে। তখন থেকেই বড় কিছুর স্বপ্নে বিভোর এদেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা।
তবে, ভক্তরা স্বপ্ন দেখলে কি হবে, যারা মাঠে খেলবেন তারাই যদি বড় কিছুর স্বপ্ন না দেখেন তাহলে তো বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব নয়। সুপার এইটে খেলোয়াড়দের শরীরি ভাষাতে মনে হয়নি তারা বড় কোনো লক্ষ্য নিয়ে খেলেছে। দল ছোট হোক কিংবা বড় প্রতিটি ম্যচের আগেই হেরে যাওয়ার যে মানসিকতা তাই বাংলাদেশের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যার প্রমাণ মিলেছে আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচে। সেমির এত কাছে থেকেও তা লুফে নেওয়ার চেষ্টা করেনি বাংলাদেশ। ক্রিকেটারদের এমন আত্ননিবেদন নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। যেখানে প্রতিটা দল শেষ বল পর্যন্ত সর্বোচ্চটা নিংরে দেয়, সেখানে সম্মানজনক পরাজয়ই মূল লক্ষ্য হাথুরুসিংহের দলের। তাইতো ক্ষমা চেয়েও ভক্তদের মন গলাতে পারেননি নাজমুল শান্ত।