আফগান রূপকথা, নাকি দক্ষিণ আফ্রিকার বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর মিশন
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মহারণ প্রায় শেষদিকে। আর মাত্র তিন ম্যাচের অপেক্ষা। এরপরই জানা যাবে, কার হাতে উঠছে বিশ্বকাপ ট্রফি। সুপার এইটের লড়াই শেষে চার দল উঠেছে সেমিতে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে দলগুলোর ফাইনালে ওঠার লড়াই। সেই যুদ্ধের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামছে চমক জাগানিয়া আফগানিস্তান ও চোকার্স তকমা পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালের চেয়ে এই ম্যাচটিকে ঘিরে ভক্তদের আগ্রহ তুঙ্গে। কারণ, যে দলই জিতুক না কেন, প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার স্বাদ পাবে। সেমিতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য অভ্যাসে পরিণত হলেও এবারই প্রথম সেমিতে উঠল আফগানরা। তবে, সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় আফগানদের সমীহ না করে উপায় নেই। খেলা শুরু বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টায়।
এবারের বিশ্বকাপটা আফগানিস্তানের কাছে স্বপ্নের মতো। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে যে রুপকথার শুরু। এরপর সুপার এইটে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আফগানরা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দেওয়ার পাশাপাশি ক্রিকেট বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে। এখানেই থেমে থাকেনি ডু অর ডাই ম্যাচে খাদের কিনারা থেকে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। আফগানদের জন্য বড় শক্তির জায়গা তাদের স্পিন আক্রমণ। রশিদ খান, নুর আলী ও মোহাম্মদ নবীদের নিয়ে সাজানো স্পিন আক্রমণ বিশ্বসেরা। তাই প্রোটিয়া ব্যাটারদের জন্য কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তির জায়গা তাদের ব্যাটিং ইউনিট। ডি কক, হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইনআপ যে কোনো বোলিং লাইআপকে গুড়িয়ে দিতে সক্ষম। যদিও প্রোটিয়াদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ তাদের অতীত পরিসংখ্যান। তাদের জন্য সেমিফাইনাল মানেই অভিশপ্ত ম্যাচ। এর আগে বেশকটি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে গিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে মিলারদের। এবার যেকোন মূল্যে ফাইনালে যেতে মরিয়া দলটি।
চলতি বিশ্বকাপে এখনও কোনো ম্যাচেই হারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপ ছাড়া এই দুইদলের দেখা হয়না বললেই চলে। দুইবারের দেখায় দুইবারই শেষ হাসি প্রোটিয়াদের। শেষ যে লড়াইটা হয়েছে তাও ৮ বছর আগে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তাই পরিসংখ্যান দেখে কাউকে এগিয়ে রাখা কঠিন।
ভক্তদের জন্য দুঃসংবাদ। এই ম্যাচেও রয়েছে বৃষ্টির শঙ্কা। অবশ্য এই বিষয়টি মাথায় রেখে রিজার্ভ ডের ব্যবস্থা রেখেছে আইসিসি। তাই বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে গেলেও তা পরের দিন অনুষ্ঠিত হবে। এই সুবিধা অবশ্য দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নেই। কারণ সেই ম্যাচের ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। তাই মাঝে আর রিজার্ভ ডে রাখেনি আয়োজকরা।
আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এরপরই মাঠে গড়াবে এই দুই দলের ফাইনালে ওঠার মহারণ। প্রোটিয়ারা যদি আবারও ‘চোকার্স’তকমা ধরে রাখে তবে, প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলবে আফগানরা। রচিত হবে আরেকটি আফগান রূপকথা।