লজ্জার রেকর্ড গড়ল আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে মামুলি লক্ষ্য
নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে আফগানিস্তান। পুরো টুর্নামেন্টে দাপুটে পারফরম্যান্স করলেও সেমির মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে যে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে আফগানরা, তা হয়তো কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি। টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েও গড়তে পারেনি লড়াই করার মতো পুঁজি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ড এ মাত্র ৫৬ রান তোলে আফগানরা। যা বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কোনো দলের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। প্রথম ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মার্কো ইয়ানসেন। প্রথম ওভারের শেষ বলে তার করা ফুল লেংথ ডেলিভারিতে কভার ড্রাইভের চেষ্টা করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তবে, সফল হতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। খুলতে পারেননি রানের খাতাই।
এরপর ক্রিজে এসেও থিতু হতে পারেননি আরেক ব্যাটার গুলবাদিন নাইব। তাকে ফিরিয়ে পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নেন ইয়ানসেন। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্প লাইনে পিচ করে হালকা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে পরাস্ত নাইব বোল্ড হয়ে ধরেন ড্রেসিং রুমের পথ। ৮ বল ৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই সাফল্য পান তারকা পেসার কাগিসো রাবাদা। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে। ৫ বলে ২ রান করেন তিনি। এরপর চাপ সামাল দেওয়ার দায়িত্বটা পরে মোহাম্মদ নবীর ওপর। তবে, তিনিও থিতু হতে পারেননি। রাবাদার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারির কোনো জবাবই দিতে পারলেন না অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। স্টাম্প উড়িয়ে নিজের প্রথম ওভারে জোড়া সাফল্যের আনন্দে মাতলেন রাবাদা। সবমিলিয়ে মাত্র ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আফগানরা।
ত্রিশের আগে ৬ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ার অভিযানে কিছুটা পথ এগিয়েছিলেন রশিদ খান ও কারিম জানাত। তবে তাদের বেশি দূর যেতে দিলেন তাবরিজ শামসি। দশম ওভারে আক্রমণে এসেই ২২ রানের জুটি ভাঙেন বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার। এক বল পর নুর আহমেদকে ফেরান শামসি। ৫০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে অল্পেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আফগানিস্তান। শামসির ফুল লেংথে করা টার্নিং ডেলিভারি ব্যাটে লাগাতে পারেননি জানাত। জোরালো আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। দ্রুত রিভিউ নেন আফগান অলরাউন্ডার। রিপ্লেতে দেখা যায়, 'উইকেট'র বেলায় এসেছে আম্পায়ার্স কল। অর্থাৎ আম্পায়ার নট আউট দিলে হয়তো বেঁচে যেতেন ১৩ বলে ৮ রান করা জানাত।
ওভারের পঞ্চম বলে পেছনের পায়ে খেলার চেষ্টায় ব্যাট ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন নুর। ফের আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। এবারও রিভিউ নিলে আসে আম্পায়ার্স কল। তাই রিভিউ না হারালেও হতাশা নিয়ে ফিরতে হয় নুরকে। আগের ওভারেই আনরিক নরকিয়ার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছিল রশিদ খানের। নতুন ওভারে বোলিংয়ে এসে দারুণ ডেলিভারিতে রশিদকে বোল্ড করে যেন ব্যক্তিগত লড়াইটি শেষ করলেন নরকিয়া। ২ চারে ৮ বলে ৮ রান করে ফেরেন রশিদ। ৫০ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে শেষমেশ ৫৬ রানে থামে দলটি।