রোড টু ফাইনাল
স্বপ্নের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতের টানা দুই
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ থেকে কেবল এক পা দুরত্বে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। দুই ফাইনালিস্টের দেখাই পেয়েছে ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের মহাযজ্ঞ। ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে প্রোটিয়াদের এটি প্রথম ফাইনাল।
দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে উঠল ভারত। রঙিন পোশাকে আইসিসির ইভেন্টে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে ভারত। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এবার টি-টোয়েন্টির ফাইনাল। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা ভারতের সামনে সুযোগ ২০১৩ সালের পর আইসিসির কোনো শিরোপা জেতার।
ফাইনালে ওঠার পথটা সহজ ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। তবে, ক্রিকেট দেবতা যেন এবার চিত্রনাট্য এভাবেই সাজিয়েছেন। গ্রুপপর্বে চার ম্যাচের প্রতিটিতে জিতেছে দলটি। ধুঁকে ধুঁকে হলেও নিজেদের বিজয়ীর বেশেই ছেড়েছে মাঠ। বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচটিতে হারের কাছাকাছি গেলেও প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের জেতার আত্মবিশ্বাস ছিল। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথম ম্যাচে অবশ্য আধিপত্য রেখেই ম্যাচ নিজেদের করেছে। মাত্র ৭৭ রানে অলআউট করে লঙ্কানদের। পায় ছয় উইকেটের জয়। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে জয়ের ব্যবধান চার রান। নেপালের কাছে প্রায় হারতেই বসেছিল। রূপকথা লিখতে লিখতে হার মানে নেপাল, ব্যবধান মোটে এক রান।
গ্রপপর্বের বাধা পেরিয়ে সুপার এইটে প্রোটিয়ারা একে একে হারায় যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। দুই স্বাগতিক দেশ ও বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ডিঙিয়ে সেমিতে ওঠে এইডেন মার্করামের দল। সেই জায়গায়, যেখানে বারবার আটকে যায় তারা। এবারও ভয় ছিল। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান সব এফোঁড়-ওফোঁড় করেই সেমিতে পা রাখে। যদিও, তাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয় প্রোটিয়ারা। মাত্র ৫৬ রানে অলআউট করে তুলে নেয় ৯ উইকেটের জয়। জায়গা করে নেয় কাঙ্খিত বিশ্বকাপ ফাইনালে।
ভারতের যাত্রা কঠিন ছিল না। একচ্ছত্র আধিপত্য রেখেই গ্রুপপর্ব থেকে সুপার এইট, সেখান থেকে সেমি ফাইনালে পা রেখেছে তারা। আয়ারল্যান্ডকে আট উইকেটে হারিয়ে আসর শুরু করা ভারত পাকিস্তানকে হারায় ছয় রানে। এই একটি ম্যাচই টানটান উত্তেজনায় ঠাসা ছিল। না হলে যুক্তরাষ্ট্রকে সাত উইকেটে হারিয়েছে এক তরফা খেলেই। গ্রুপপর্বে কানাডার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। এরপর শুরু হয় সুপার এইটের লড়াই।
যেখানে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া–কাউকেই পাত্তা দেয়নি ভারত। তিন ম্যাচের সবকটিতে জিতে নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল। সেমিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। এতটুকু লড়াই জমাতে পারেনি ইংলিশরা। অসহায় আত্মসমর্পনে বিদায় নেয় আসর থেকে। তাতে, ভারত নিশ্চিত করে আরেকটি বিশ্বকাপ ফাইনাল। ফরম্যাট ভিন্ন হলেও বিশ্বকাপ তো বিশ্বকাপই।