তাইজুলের ফাইফার ছাপিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার লিড
ব্যাটিং ইনিংসটা চরম হতাশায় কাটে বাংলাদেশ। একের পর এক ব্যর্থতায় মাত্র ১০৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে নিজের স্পিন ঘূর্ণিতে কিছুটা হলেও বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি দিলেন তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় সেশনে এক উইকেট নেওয়া তাইজুল তৃতীয় সেশনে এখন পর্যন্ত তুলে নিয়েছেন আরও চার উইকেট। মোটা পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে দুঃখ ভুলিয়ে দেবার চেষ্টা করলেন এই স্পিনার।
তবে, বাংলাদেশের পুঁজি কম হওয়ায় তাইজুলের স্পিন সামাল দিয়েই লিড নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে করা বাংলাদেশের ১০৬ রান ছাপিয়ে গেছে সফরকারীরা।
দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝিতে ব্যাটিং ইনিংসের ইতি টানে বাংলাদেশ। এরপর এই সেশনেই প্রথম ইনিংসে শেষ করতে নেমে বাংলাদেশকে ব্যাটিং শেখায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও শেরেবাংলায় দাপট দেখাচ্ছে প্রোটিয়ারা। এই সেশনে স্বস্তি বলতে স্রেফ দুই উইকেট নিতে পারে বাংলাদেশ।
চা বিরতির আগে এই সেশনে এক ঘণ্টা ব্যাটিং করার সুযোগ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই সময়ে স্কোরবোর্ডে ৬৫ রান তুলতে দুই উইকেট হারায় তারা। দুই উইকেটের একটি নেন হাসান মাহমুদ। অন্যটি তুলে নেন তাইজুল ইসলাম।
এর আগে বাজে ব্যাটিংয়ের প্রতিযোগিতা দেখিয়ে আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেড় সেশনে ১০৬ রানে অলআউট বাংলাদেশ।
প্রথম দিনের দুই সেশন শেষ হওয়ার আগেই শেষ বাংলাদেশ। দেখে কে বলবে, স্বাগতিক হিসেবে নেমেছেন শান্তরা! বাংলাদেশকে অল্পতে থামিয়ে দ্বিতীয় সেশনেই প্রথম ইনিংসে নেমে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু আগে ব্যাটিং নিয়েও এর সুবিধা মোটেই লুফে নিতে পারল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। হতশ্রী ব্যাটিংয়ের নমুনা শুরু হয় শুরু থেকেই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দেন সাদমান ইসলাম।
ব্যাট হাতে প্রথম ওভারটা কাটিয়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পান সাদমান ইসলাম। উইয়ান মাল্ডারের প্রথম তিন বল সামলাতে পারলেও চতুর্থ বলে আর পারেননি তিনি। ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে স্ট্যাম্পের বাইরের বলে অপ্রয়োজনীয় শট মারতে যান সাদমান। দ্বিতীয় স্লিপে প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান তখন ছয়, ম্যাচের বয়স মাত্র ১০ মিনিট। চার বল খেলে ডাক মেরে বিদায় নেন সাদমান।
ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুমিনুল হকও। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার বিদায় নেন চার রান করে। দলীয় ১৩ রানে মাল্ডারের বলে উইকেটের পেছনে কাইল ভেইরেনের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। চারে নামা অধিনায়ক শান্ত দেখান ব্যর্থতার আরেকটি চিত্র। তিনি ক্রিজে এসে হাল ধরার বদলে হতাশায় ফেলেন বাংলাদেশকে। মাত্র সাত বল খেলে সমান সাত রান করে বিদায় নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
২১ রানে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট। মাল্ডারের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিড অফে কেশব মহারাজের তালুবন্দি হন শান্ত।
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম নেমে চেষ্টা করেন সতর্ক থাকার। তবে, ২০ বলের বেশি ধরে রাখতে পারেননি নিজেকে। কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হন ১১ রানে। ৪০ রানে ঘটে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের পতন। দলকে আরও বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেন লিটন দাস। রাবাদার বলে খোঁচা মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। মাত্র এক রান করে ধরা পড়েন ত্রিস্তান স্টাবসের হাতে। ৪৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশা দেখে বাংলাদেশ।
এর মাঝেই দলীয় ৬০ রানে মেহেদী হাসান মিরাজও আরেক দফায় হতাশ করেন। কেশব মাহারাজের এলবির ফাঁদে পড়ে ১৩ রানে বিদায় নেন মিরাজ। ৬০ রানে ছয়টি উইকেট হারানোর হতাশা নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর ব্যাটিংয়ের একই চিত্র ধরে রাখে স্বাগতিক ব্যাটাররা। একে একে ব্যর্থতার নজির দেখিয়ে লাঞ্চের পরই গুঁটিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ৬০ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে যোগ করতে পেরেছে মোটে ৪৬ রান। তার মাঝে উইকেট হারিয়েছে আরও চারটি। টেস্টের ম্যাচ টিকে থাকার অথচ তিন ঘণ্টারও উইকেটে থাকতে পারল না স্বাগতিক বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বল হাতে ২৬ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। সমান তিনটি করে নেন কেশভ মাহারাজ ও উইয়ান মাল্ডার।