আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার সফলতা অর্জন করেছি : পলক
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে সম্মানজনক এবং মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট-এর (আইসিপিসি) এবারের হোস্ট কান্ট্রি হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রায় প্রতি বছরই তরুণ প্রজন্মের জন্য বিশেষভাবে আয়োজিত হয় এই কনটেস্ট, যার যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সাল থেকে।
সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে আইসিপিসি-এর ৪৫তম আসরের নির্বাহক এজেন্সি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং বাংলাদেশের থেকে হোস্ট ইউনিভার্সিটি ‘ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)’।
আইসিপিসি ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং হোস্ট ইউনিভার্সিটি হিসেবে ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) ৪৫তম আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা-এর মূল আয়োজক। এরই মধ্যে বাংলাদেশে এই আয়োজন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল প্রকার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে এবং চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আগামী ৮ নভেম্বর দুপুরে এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হবে।
প্রথম বারের মতো বাংলাদেশে আইসিপিসি আয়োজনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোসহ কী কী আয়োজন থাকছে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে।
আজ রোববার রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার-এর বিসিসি অডিটরিয়ামে আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা আয়োজনকে ঘিরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রেস ব্রিফ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও আইসিপিসি নির্বাহী পরিচালক ড. উইলিয়াম বি. পাউচার।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এ আয়োজনটি আইসিটিতে আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের দারুণ একটি সুযোগ। একই সঙ্গে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ আইসিটি নেতৃত্বদের বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে দেওয়ারও একটি সুযোগ। আমরা আমাদের সব বন্ধুকে বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও আতিথেয়তার স্বাদ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
পলক আরও বলেন, ১৩ বছরে আইসিটি খাতে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। ১৩ বছর আগে আমাদের মাত্র ৫ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, যা এখন ১৩০ মিলিয়ন। ১৩ বছর আগে কোনও আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি ছিল না, প্রযুক্তি খাতে রপ্তানি ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। এখন সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার এবং সার্ভিস সেক্টর থেকে সব মিলিয়ে প্রতি বছরে সেটি ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।
ড. উইলিয়াম বি. পাউচার বলেন, আইসিপিসি বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি অন্যতম বিশেষ আয়োজন। আমাদের লক্ষ্য ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের শক্তির ওপর নির্ভর করে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলা। আর এর জন্য শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।
ইউএপির উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান আইসিপিসি ফাউন্ডেশন, বিসিসি এবং আইসিটি বিভাগের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া আইসিপিসির উপনির্বাহী পরিচালক ড. মাইকেল জে. ডোনাহু, বিসিসি নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যদের মধ্যে আইসিপিসির উপনির্বাহী পরিচালক ও আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ কনটেস্ট-এর পরিচালক ড. মাইকেল জে. ডোনাহু, হুয়াওয়ের করপোরেট কমিউনিকেশনস বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ড ভিকি ঝ্যাং, জেট ব্রেইন-এর বিনিয়োগ বিভাগের এসভিপি এবং গবেষণা ও শিক্ষা বিষয়ক বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অন্ড্রে ইভ্যানভ প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ৪৪তম আইসিপিসি প্রতিযোগিতায় এশিয়া পশ্চিম অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সম্মান অর্জন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এ বছর ৭০টি দেশ থেকে প্রায় ১৩৭টি দল থেকে মেধাবী প্রতিযোগীরা এই কনটেস্টের চূড়ান্ত রাউন্ডে অংশ নিচ্ছে। উক্ত আয়োজনকে ঘিরে ইতোমধ্যে ২০০ জন আইসিপিসি রিজিওনাল কনটেস্ট ডিরেক্টর ছাড়াও কর্মকর্তাসহ অন্তত এক হাজারেরও বেশি বিদেশি অতিথির আগমন হচ্ছে বাংলাদেশে।