জ্ঞানভিত্তিক ভবিষ্যতে রোবট মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজের পাশাপাশি জ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবনী কাজের জন্য বাংলাদেশের শিশুরা রোবট তৈরি করবে। বিশ্বের উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশের শিশুরা মোটেও পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশ যেন রোবট বানাতে এবং রপ্তানিতে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে, সে জন্য খুদে রোবটিয়ারদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে বুয়েটের রোবটিকস ল্যাব যেন তারা ব্যবহার করতে পারে, সে বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

গতকাল মঙ্গলবার তরুণদের অংশগ্রহণে পঞ্চম বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)-তে এই রোবট অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, খেলায় অংশগ্রহণ করলেই জয় বা পরাজয় নির্ধারণ করা যায়। আমাদের দেশের তরুণেরা ইউরোপের থেকে পিছিয়ে নেই এবং তারা মেধাবী। তাদের শুধু সুযোগ তৈরি করে দেওয়া দরকার। আর এই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পলক বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে হাতেকলমে শিখতে পারে সে জন্য স্কুল-কলেজে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, উদ্ভাবনের দিকে মানুষকে অনুপ্রেরণা দেওয়াই আমাদের কাজ। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য দক্ষ মানবশক্তি তৈরির একটি অসাধারণ প্রত্যয় এবং পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকারের আছে। সেটি বাস্তবায়নে সব সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কাজের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত থাকে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল। এ ছাড়া অনুষ্ঠানটিতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন ড. সেঁজুতি রহমান এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে রোবট অলিম্পিয়াড আয়োজিত হচ্ছে। এই বছর জাতীয় পর্বে সারা দেশের ৬৪টি জেলা থেকে ১০২৪ জন প্রতিযোগী নিবন্ধন করেছে। এ অলিম্পিয়াড আয়োজনের অংশ হিসেবে এ বছর সারা দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে অবস্থিত শেখ রাসেল স্কুল অফ ফিউচার-এ অলিম্পিয়াডের অ্যাক্টিভেশন অনুষ্ঠান হয়েছে। আটটি বিভাগীয় শহরের দশটি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার-এ অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা।

উল্লেখ্য, জুনিয়র এবং চ্যালেঞ্জ; এই দুইটি গ্রুপে এ বছর মোট ৫টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এগুলো হলো ফিজিক্যাল কম্পিউটিং, ক্রিয়েটিভ ক্যাটাগরি, রোবটিকস কুইজ, রোবট গ্যাদারিং এবং রোবট ইন মুভি। জাতীয় পর্বে বিজয়ীদের মধ্য থেকে পরবর্তীতে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ এবং ওয়ার্কশপের মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাই ২৪তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে থাইল্যান্ডের ফুকেট-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।