টিকাবিরোধী সব ভুল তথ্য সরাবে ইউটিউব
জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউব জানিয়েছে, অনুমোদিত কোভিড টিকা সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়ায়—এমন সব ধরনের কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মটি থেকে সরিয়ে ফেলা হবে। এর পাশাপাশি টিকাবিষয়ক অসত্য কোনো কিছু দাবি করলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যবস্থা তো থাকছেই। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনুমোদিত টিকাগুলো বিপজ্জনক এবং অটিজম, ক্যানসার বা বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি করে—এমন বার্তা দেওয়া ভিডিওগুলো প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলা হবে। নতুন নীতিমালায় টিকার বিরুদ্ধে প্রচারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করাও অন্তর্ভুক্ত থাকছে।
শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্ল্যাটফর্মে স্বাস্থ্যবিষয়ক ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় বেশি কিছু করছে না বলে সমালোচনা শুনে আসছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুযোগ করেছিলেন—কোভিড টিকা নিতে মানুষ সন্দিহান হওয়ার পেছনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা ভুল তথ্য অনেকাংশে দায়ী। বাইডেন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে এ সমস্যা সমাধানের আহ্বানও জানিয়েছিলেন।
গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউব জানিয়েছে, কোভিড টিকা সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়ানো কনটেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর, গত বছর থেকে এ পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মটি থেকে এক লাখ ৩০ হাজার ভিডিও সরানো হয়েছে।
এক ব্লগ পোস্টে ইউটিউব জানিয়েছে—কেবল কোভিড টিকা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্যই নয়, অন্যান্য টিকা সম্পর্কেও ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে—এমন কনটেন্টও প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন নীতিমালায় দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদিত অন্যান্য টিকা, যেমন হাম বা হেপাটাইটিস বি’র টিকা নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ালেও একই ব্যবস্থা নেবে ইউটিউব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথা উল্লেখ করে ইউটিউব বলেছে, ‘আমরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও ডব্লিউএইচও অনুমোদন দিয়েছে এবং নিরাপদ ও কার্যকর বলে নিশ্চিত করেছে—এমন প্রচলিত টিকাগুলোর ব্যাপারে নতুন নির্দেশিকাসহ ইউটিউবের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ভুল তথ্য বিষয়ক নীতিমালা পরিবর্ধন করছি।’
এ ছাড়া টিকা সম্পর্কিত ব্যক্তিগত সাক্ষ্য, টিকাবিষয়ক নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়বস্তু, নতুন টিকার পরীক্ষা এবং টিকারর সফলতা বা ব্যর্থতা সম্পর্কিত ইতিহাস ভিত্তিক ভিডিওগুলো প্ল্যাটফর্মে থাকলে আপত্তি নেই বলে ইউটিউব জানিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কোভিড টিকাবিষয়ক ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে ফেসবুককে।
এ ছাড়া গত মার্চে মাইক্রো ব্লগিং এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম টুইটার ঘোষণা করেছিল— টিকা সম্পর্কে বারবার ভুল তথ্য শেয়ার করা ব্যবহারকারীদের প্ল্যাটফর্ম থেকে নিষিদ্ধ করা হবে।