তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্র্যান্ডিংয়ে বেসিসের নতুন মাইলফলক
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও বাজার সম্প্রসারণে দেশে-বিদেশে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন ও ভিয়েনাতে বাংলাদেশ মিশন এবং স্থায়ী দূতাবাসের সহযোগিতায় ইউরোপের তিনটি দেশ অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও যুক্তরাজ্যে নানা আয়োজনে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে বেসিস। প্রথম বারের মতো আন্তর্জাতিক কোনও আয়োজনে টাইটেল স্পন্সর (হেডলাইন পার্টনার) হিসেবে নতুন মাইলফলক যুক্ত করতে যাচ্ছে সংগঠনটি।
আজ মঙ্গলবার বেসিস মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, যেখানে এসব তথ্য জানায় বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
বেসিস সাতটি স্তম্ভের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অধিকতর উৎকর্ষ সাধনের জন্য কাজ করছে। এর মধ্যে বিদেশি বাজারে শিল্পের প্রচার এবং বিকাশ হচ্ছে অন্যতম দুটি স্তম্ভ। আর এ কারণেই ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রচার ও প্রসারে কোনও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে প্রথম বারের মতো টাইটেল স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হওয়ার নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছে বেসিস।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরি হিমিকা, বেসিস পরিচালক আহমেদুল ইসলাম বাবু, বেসিসের অ্যাডভাইজরি স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, বেসিসের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি টি আই এম নুরুল কবীর প্রমুখ।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বেসিসের নতুন এই মাইলফলক সম্পর্কে জানিয়ে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘আইসিটি প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণাকে সামনে রেখে বেসিস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রপ্তানি বাড়াতে কাজ করছে। বেসিসের সদস্য কোম্পানি এখন এক দশমিক চার বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করছে, সেটিকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্র্যান্ডিং ও বিদেশি বিনিয়োগের বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্র্যান্ডিং ও বিনিয়োগের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এবার আমরা ইউরোপের বাজারে তিনটি বৃহৎ অনুষ্ঠানে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করছি। সেখানে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, যুক্তরাজ্য এবং স্লোভাকিয়ার অন্তত ৩৫০টি কোম্পানির সামনে বেসিস থেকে ‘বাংলাদেশ : দ্য নেক্সট আইসিটি পাওয়ারহাউস’ নামক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। যেখানে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া আমাদের সফলতার গল্পগুলো উপস্থাপন করা হবে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং বেসিস সদস্য কোম্পানিগুলোর সাথে অংশীদারত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হবে। এ ছাড়া উক্ত দেশগুলোর তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনগুলোর সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে আমাদের নতুন নতুন অংশীদারত্ব তৈরি হবে এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। আগামীতে এ ধরনের উদ্যোগের ধারাবাহিকতা থাকবে।”
বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরি হিমিকা বলেন, ‘শুধু ইউকে বা ইউরোপের বাজার নয়, বিশ্বের অন্যান্য বাজারগুলোতেও আমাদের সদস্য কোম্পানিগুলো সফলতার সাথে ব্যবসা করছে। এই সফলতাকে সামনে নিয়ে সব বাজার কীভাবে আরও সম্প্রসারণ করা যায়, সেই বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
বেসিস পরিচালক আহমেদুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও বেসিসের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা জোরালোভাবে কাজ করছি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা গেছে, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে প্রাধান্য দিচ্ছে। আমরা মনে করি, বেসিসের নতুন এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক বাজার আরও সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রচারণায় এবারের আয়োজনের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ জুন অস্ট্রিয়াতে, ১ জুলাই হাঙ্গেরিতে এবং ২ থেকে ৬ জুলাই যুক্তরাজ্যে সফর করবেন বেসিস প্রতিনিধিদল। বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদের নেতৃত্বে এই সফরে থাকছেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরি হিমিকা ও সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান।
যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে আগামী ৫ জুলাই থেকে ৬ জুলাই গ্লোবাল সোর্সিং অ্যাসোসিয়েশনের একটি ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট ফেস্টিভ্যাল অব সোর্সিং অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর এই ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের ‘হেডলাইন পার্টনার’ হয়ে প্রথম বারের মতো নতুন মাইলফলক রচনা করতে যাচ্ছে বেসিস। বেসিসের সাথে পৃষ্ঠপোষকতায় থাকছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।