দৃষ্টিনন্দন গুঠিয়া মসজিদে একদিন
সুসজ্জিত একটি মসজিদের কথা বলছি, যা বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ মসজিদ বলে বিবেচিত। বরিশাল থেকে বানারীপাড়া বা নেছারাবাদ যেতে সড়কের পাশেই দেখা যাবে এ মসজিদ। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির নাম বায়তুল আমান জামে মসজিদ। স্থানীয়দের কাছে এটি গুঠিয়া মসজিদ নামে পরিচিত। বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের জাংগুরিয়া গ্রামে মসজিদটির অবস্থান। সব ধর্ম ও শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছেই একটি দর্শনীয় স্থান। বিশেষ করে বিকেলের পর থেকে গোধূলি অবধি মসজিদটি দেখতে শত শত পর্যটক আসেন দূর-দূরান্ত থেকে।
বরিশালের নথুল্লাবাদ থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত গুঠিয়া মদজিদ। মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি মাদ্রাসা ও এতিমখানা ভবন। সবুজ ফুল-ফলের গাছে ঘেরা এই মসজিদ। হেলিপ্যাড, টলটলে পানির পুকুরে শানবাঁধানো ঘাট, ফুলের বাগান, নার্সারি, গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা, ঈদগাহ ফলক, পানির ফোয়ারা, কবরের জন্য নির্ধারিত জায়গাসহ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে মসজিদের প্রাঙ্গণ।
১৪ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত মসজিদটির সীমানা হিসেবে ইট-পাথরের কোনো দেয়াল নির্মাণ করার বদলে পানির লেকবেষ্টিত। গেট থেকে ঢুকলেই হাতের ডান পাশে চোখে পড়ে টলটলে পানির পুকুর, আর শানবাঁধানো মনকাড়া পুকুরঘাট।
মসজিদটির প্রধান মিনারের উচ্চতা ১৯৩ ফুট। স্তম্ভটি নির্মাণে বিশ্বের কিছু পবিত্র স্থানের মাটি ও জমজম কূপের পানি ব্যবহার করা হয়েছে। মাটি সংগ্রহ করা হয়েছে মসজিদে নববীসহ মুসলিম উম্মাহর ভক্তিবাদ ও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু স্থান থেকে।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মসজিদ নির্মাণের সব ব্যয় বহন করেছেন তিনি। এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু নিজ বাসভবনের সন্নিকটে নিজ জমিতেই গড়ে তুলেছেন এ মসজিদ। ২০০৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়, শেষ হয় ২০০৬ সালে।
গোধূলিলগ্নে মসজিদটি দেখতে এতটাই মনোমুগ্ধকর, যা বলে ভাষায় বোঝানো যাবে না। পরিকল্পিত ও রুচিশীল লাইটিং-ব্যবস্থা গোধূলিলগ্নে মসজিদটিকে সাজিয়ে তোলে শতগুণ।
এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীর জন্যও নামাজের আলাদা জায়গা রয়েছে। একই সঙ্গে এই মসজিদে হাজার লোক নামাজ আদায় করতে পারেন। আট গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নমানের কাচ, ফ্রেম, বোস স্পিকার ও মার্বেল পাথর। ২০ হাজারের অধিক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঈদগাহ ময়দান রয়েছে এখানে। ২০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বরিশালের গুঠিয়ার মাটিতে এ মসজিদ নির্মাণ করতে, যা আজ বরিশালবাসীর কাছে খুব পছন্দের একটি মসজিদ ও দর্শনীয় স্থান।