যে গ্রামে রাস্তা নেই!
ভেনিস পৃথিবীর একমাত্র শহর নয়, যেটি মূলত নৌকায় ঘুরে বেড়ানো যায়। নেদারল্যান্ডসের গিথোর্ন গ্রামের মধ্যে কোনো রাস্তা নেই। এখানে ছয় কিলোমিটারের বেশি খাল রয়েছে।
রাস্তা নেই মানে গাড়ি নেই। গিথোর্ন গ্রামে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা তাদের গাড়ি গ্রামের বাইরে পার্ক করে আসে। এরপর একটি বোট ভাড়া করে ঘুরতে হয় পুরো গ্রামটি।
মনোরম গ্রামটিতে রয়েছে ঐতিহাসিক ভবন, প্রাচীন গীর্জা এবং দুর্গ। গ্রামটি লম্বা গাছে ঘেরা—ঠিক রূপকথার মতো! দর্শনার্থীরা মনোরম এই পরিবেশের আশেপাশের মধ্য দিয়ে নৌকা চালিয়ে ভ্রমণ করতে পারেন।
হ্রদ এবং জঙ্গলে পরিপূর্ণ এই গ্রামটিতে রয়েছে এর সুদর্শন খামার এবং খড়ের ছাদ। এ ছাড়া কিছু কাঠের সেতু রয়েছে, যা এর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গিথোর্নে মোট ১৭৬টি সেতু রয়েছে।
গিথোর্ন গ্রামটি পিট (এক ধরনের জ্বালানি, যা বাগানে ব্যবহৃত হয়) হার্ভেস্টারদের বসতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পিট কাটার ফলে পুকুর এবং হ্রদ তৈরি হয়েছিল। এরপর এখানে কিছু দ্বীপের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা দ্বীপগুলিতে বাড়ি তৈরি করেছিল। ঐতিহ্যবাহী গিথোর্ন বোট ব্যবহার করে স্থানীয়রা যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
গিথোর্ন গ্রামটিতে সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। কাঠের সেতুগুলো এখনও আছে। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক নৌকা যোগ করা হয়েছে। এক বা দুই ঘণ্টার নৌকা ভ্রমণ আপনাকে আঠার ও উনিশ শতকের চমৎকার খামারবাড়ির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবে।
গ্রামটি ঘিরে রয়েছে চমৎকার কিছু রেস্তোরা। যার মধ্যে অনেকগুলি সুন্দরভাবে জলের ধারে অবস্থিত। ডাচ চলচ্চিত্র নির্মাতা বার্ট হ্যানস্ট্রা এখানে তার বিখ্যাত কমেডি সিনেমা ‘ফ্যানফেয়ার’ (১৯৫৮) তৈরি করেন। এরপরই গ্রামটি স্থানীয়ভাবে বিখ্যাত হয়ে ওঠে।
গ্রামটি এখনও শুধুমাত্র নৌকা দ্বারাই তার যোগাযোগ ব্যবস্থা রেখেছে। গিথোর্ন উত্তরের ভেনিস বা নেদারল্যান্ডের ভেনিস নামে পরিচিত। রাস্তা ছাড়া এই গ্রামটি নেদারল্যান্ডসের শীর্ষ দশ পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে একটি।
সূত্র-হল্যান্ড ডট কম