গন্তব্যে এবার তিস্তা ব্যারেজ
নগরজীবনের ব্যস্ততার মাঝে মন চায় একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে। তাই তো আপনার একঘেয়েমি ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে আপনি ঘুরে আসতে পারেন বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ থেকে। অতি সহজেই আপনি যেতে পারবেন ব্যতিক্রমী সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজে। তো চলুন ঘুরে আসি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী নামক স্থানে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী নামক স্থানে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ এর সৌন্দর্য্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। শীতকালে ব্যারেজে বিভিন্ন রকমের অতিথি পাখির দেখা মেলে । যে দৃশ্য আপনার চোখ জুড়িয়ে দেবে ।
এছাড়াও বিশাল এই এলাকায় নদীর দুই ধারে রয়েছে ছোট বড় বেশ কিছু পার্ক ও পিকনিক স্পট। যেমন : ডালিয়া পিকনিক স্পট, তিস্তা পিকনিক স্পট, তিস্তা গভর্নমেন্ট পার্ক ইত্যাদি । ছোট ছোট নৌকা করে আনন্দদায়কের ভ্রমণের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে । এছাড়াও ভরা বর্ষায় যখন বিশাল বিশাল সুইচ গেইট গুলো খুলে দেওয়া হয় তখন পানির শো শো শব্দ আপনাকে রোমাঞ্চকর অনুভূতি দেবে। স্থানীয় মৎস শিকারীদের মাছ ধরার অপরূপ দৃশ্য চোখে পরবে এই স্থানে । উত্তরাঞ্চলের বিখ্যাত মাছ বৈরালী । যা শুধু তিস্তা ও ধরলা নদীতেই পাওয়া যায়। হারিয়ে যেতে বসলেও শুধুমাত্র তিস্তা ব্যারেজ অঞ্চলেই এই মাছের দেখা মিলবে । প্রচূর চাহিদা থাকায় যে মাছ পাড়ে ওঠা মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়।
এছাড়াও রয়েছে কৃত্রিম বনাঞ্চল এলাকা যেখানে নিজেকে ক্যামেরাবন্দী করে স্মৃতির পাতায় রেখে দিতে পারবেন আজীবন।
যেভাবে যাবেন
ব্যারেজের পূর্ব দিকে লালমনিরহাট ও পশ্চিমে নীলফামারী জেলা অবস্থিত । তাই এই দুটি জেলার যেকোনো একটি দিয়েই ব্যারেজ ঘুরে আসতে পারেন। তবে তুলনামূলক সহজ হবে যদি লালমনিরহাট এর রুট। লালমনিরহাট থেকে শাহ আলী , এস আর ট্রাভেলস, বরকত এক্সপ্রেস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস সহ অনেকগুলো বাস হাতীবান্ধার উপর দিয়ে চলাচল করে ।
সবগুলো বাসের কাউন্টার গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে রয়েছে । ঢাকা থেকে আনুমানিক ৯ থেকে ১০ ঘন্টা জার্নি করে হাতীবান্ধা,লালমনিরহাট পৌঁছে যেতে পারেন । রাতের বাসে রওনা হয়ে সকাল বেলায় হাতীবান্ধায় নেমে অটো, সি এন জি কিংবা ব্যাটারী চালিত ভ্যানে করে মাত্র ১৫ কিলোমিটার পথ সরাসরি দোয়ানী মোড় হয়ে চলে যেতে পারেন কাঙ্খিত তিস্তা ব্যারেজে । চাইলে সুবিধামত ভেঙ্গে যেতেও পারেন।
বাস ভাড়া নন এসি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা । আর এসি ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে দু একটি বাস এই রুটে স্লিপার কোচ চালু করেছে। যা আপনার ভ্রমণকে করবে আরও আনন্দদায়ক।
এ অঞ্চলের মানুষ গ্রামীণ সহজ সরল স্বভাবের হওয়ায় আপনার যেকোনো তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে বলে আশা রাখছি ।
আপনি চাইলে ট্রেন ভ্রমণেও যেতে পারেন তিস্তা ব্যারেজ । তবে এর জন্য কমলাপুর থেকে" লালমনি এক্সপ্রেস " করে আপনাকে লালমনিরহাট সদরে রেল স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে বাসে করে লম্বা সড়ক ধরে পৌঁছাতে হবে দোয়ানী মোড় । দোয়ানী মোড় থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরত্বে তিস্তা ব্যারেজ । শোভন ৫০৫ টাকা আর এসির জন্য ১০০০ টাকার মতন গুণতে হবে।
থাকবার জন্য তিস্তা ব্যারেজে অবসর নামক সরকারি রেস্ট হাউস থাকলেও সেটা সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। তবে হাতীবান্ধা কিংবা লালমনিরহাট শহরে বেশ কিছু মানসম্মত হোটেল রয়েছে। আপনি চাইলে সেগুলোতে একরাত বিশ্রাম করে ফিরে আসতে পারেন গন্তব্যে।