অঘোষিত সফরে কিয়েভে দুই মার্কিন মন্ত্রী, জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কিয়েভে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রুশ সামরিক আগ্রাসনের পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা ইউক্রেনে গেলেন। খবর সিএনএনের।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গতকাল রোববার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যাত্রা করেন বলে জানিয়েছে সিএনএন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, দুই মার্কিন মন্ত্রী ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেছেন।
এর আগে গত শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দুই মার্কিন মন্ত্রীর ইউক্রেন সফরের তথ্য জানিয়েছিলেন। তবে, সে সময় হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, কিয়েভে সফরে গিয়ে অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন—মার্কিন কূটনীতিকেরা এ সপ্তাহে ইউক্রেনে ফিরে যাবেন। এ পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে সংহতির শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলছেন—অ্যান্টনি ব্লিনকেন আরও জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ব্রিজেট ব্রিন্ককে মনোনীত করতে যাচ্ছেন।
২০১৯ সালের মে মাসে মেরি ইয়োভানোভিচকে ইউক্রেন থেকে প্রত্যাহার করার পর থেকে সে দেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পদটি খালি ছিল। ব্রিজেট ব্রিন্ক বর্তমানে স্লোভাকিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ছাড়া ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটের দেশগুলোর মতো সামরিক সক্ষমতায় রূপান্তর হতে সহায়তা দিতে অতিরিক্ত বিদেশি সামরিক অর্থায়ন হিসেবে ৭১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানে বাইডেন প্রশাসনের অভিপ্রায় নিয়েও ব্লিনকেন ও অস্টিন আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও প্রতিরক্ষা বিভাগের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, দুই সফররত মার্কিন মন্ত্রী রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা প্রসঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
তবে, মার্কিন কর্মকর্তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন—মার্কিন সামরিক বাহিনী এখনও ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সরাসরি জড়িত হবে না।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, ‘(মার্কিন)প্রেসিডেন্ট খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন—ইউক্রেনে কোনো মার্কিন সেনা যুদ্ধ করবে না।’ এ ছাড়া দুই মার্কিন মন্ত্রীর ইউক্রেন সফর ‘মার্কিন বাহিনীর জড়িত হওয়ার চিত্র তুলে ধরছে না।’
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতির প্রমাণ হিসেবে দুই মন্ত্রীর কিয়েভ সফরকে স্বাগত জানালেও, জো বাইডেন নিজে কেন এ সফরে গেলেন না, তা নিয়ে তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কোনো দেশে ভ্রমণের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন, বিশেষ করে তাঁর ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অনন্য বিষয় জড়িত থাকে। তাই, কোনো মার্কিন মন্ত্রী কিংবা অন্য কোনো বিশ্বনেতার সফরের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভ্রমণের অনেক পার্থক্য রয়েছে।